৮ বছর আগে বাবাকে হত্যা, এখন ছেলের কবজি কাটার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক কলেজ ছাত্রের কবজি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় ওই ছাত্রের পরিবারের আরও চার জন আহত হয়েছেন। তাদের তিন জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলায় রনি মিয়ার (২২) বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তার ভাই মো. রাজীব মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আট বছর আগে উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন আমার বাবা আব্দুর রবকে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় বড় ভাই মাঈনুদ্দিন মিয়া মামলা করেন। আট বছরে সাদ্দামসহ অনেকেই মামলার অভিযোগপত্র থেকে তাদের নাম বাদ দিয়ে দেয়। পলাতক ছিল দুই ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ ও সাইফুল্লাহ। শনিবার পুলিশ সাইফুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে।”
সাইফুল্লাহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই সাদ্দাম ও তার সহযোগিরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে শুরু করে জানিয়ে তিনি বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে সাদ্দামের নেতৃত্বে ইয়ানুছ আলী, রাসেল, জুয়েল, জাকির, আলী হোসেন, হালিম ও আলামিন সহ ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রাম দা, রড, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। দুই ভাই, মা, ভাবী ও ফুফুকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।”
হামলাকারীরা স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অভিযুক্তদের ‘নিজেদের লোক’ বললেও, এই ঘটনার দায় না নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। তার বক্তব্য, আইন তার নিজের গতিতে চলবে। অন্যায়কারীর বিচার হবে।
আহতরা হলেন, আব্দুর রব মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগম, বড় ছেলে মো. মঈনুদ্দিন মিয়া ও তার স্ত্রী নিলুফা বেগম, ছেলে মো. রনি মিয়া ও বোন আয়েশা সিদ্দিক।
আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আহতের বোন জ্যোৎস্না বেগম একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে সাদ্দাম হোসেন সহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অভিযোগ সম্পর্কে ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কারণ আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এমপি (নজরুল ইসলাম বাবু) সাহেবের বাড়িতে ওনার দাদার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান ছিল। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তার কাছেই ছিলাম।”
তার দাবি, “যাদের নাম এসেছে তারা কেউ ছাত্রলীগ করে না। শুধু শুধু ছাত্রলীগকে বদনাম করা হচ্ছে। তাছাড়া ওর বাবার হত্যার ঘটনায় আমার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। সব অভিযোগ মিথ্যা।”
নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট মানে আমার সমর্থক হবেই। আমার পরিচিত কিংবা দলের লোক অন্যায় করলে ওর বিরুদ্ধে মামলা সবার আগে হবে। এ বিষয়ে থানায় বলা আছে। আইন তার নিজের গতিতে চলবে। অন্যায়কারীর বিচার হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার দাদার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান ছিল। উপজেলা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাদ্দামও উপস্থিত ছিলেন।”
Comments