ঘুষের কোটি টাকা উদ্ধার, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সার্ভেয়ার আটক
মেগা প্রজেক্টে দুর্নীতির অভিযোগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মো. ওয়াসিমকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার বিকেলে কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
এদিন পৃথক তিনটি অভিযানে র্যাব সদস্যরা ঘুষ হিসেবে নেওয়া ৯৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেন। র্যাব-১৫ এর অধীনে রামু ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কক্সবাজারে সরকারের অর্ধ শতাধিক মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নাধীন অবস্থায় রয়েছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমও চলমান। দীর্ঘ দিন থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, ভূমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জমির মালিকদের জিম্মি করে বড় অংকের টাকা আদায় করছে। ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন জমির মালিক র্যাবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়।
তিনি বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মো. ওয়াসিমকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছে ঘুষ হিসেবে নেওয়া নগদ ১৬ লাখ টাকা এবং সরকারি নথিপত্র পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলার দায়ের করা হয়েছে।
এ ছাড়া, বাহারছড়া বাজার এলাকায় সার্ভেয়ার মো. ফরিদ ও মো. ফেরদৌসের বাড়িতেও অভিযান চালায় র্যাব। তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ফরিদের বাড়ি থেকে নগদ ৬০ লাখ ৮৫ হাজার এবং ফেরদৌসের বাসা থেকে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়— বলেন মেহেদী হাসান।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, এটা ব্যক্তিগত অপরাধ। গ্রেপ্তার সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিকভাবেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযাগ উঠেছে এলআর ফান্ডে চাঁদা না দিলে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ চেক দেওয়া হয় না। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে কনফারেন্স রুমে ডেকে চেক হস্তান্তর করা হয়। তাদের আমরা জিজ্ঞাসা করি চেক পেতে কোথাও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে কি না। কেউ অভিযোগ না করলেতো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিন্দুমাত্র পিছপা হবো না।
মেগা প্রজেক্ট চালুর পর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, এডিসি জাফর আহমেদ এবং বেশ কয়েকজন সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
Comments