দেশের ক্রিকেটের সংস্কৃতি বদলানোর ইঙ্গিত কোচের

দেশের বাইরে গেলেই পরিস্থিতি বদলে যায়। কঠিন সংগ্রাম করতে হয়, ইনিংস হার এড়ানোই কঠিন হয়ে যায়। বিব্রতকর এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গেল কয়েক বছরে দেশের ক্রিকেটের যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তাতে বদল আনতে চান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
Russell Domingo, neil mckenzie, Otis Gibson
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মিরপুরে টেস্ট মানে আড়াই দিন, তিন দিনেই শেষ। অতি মাত্রায় টার্নিং উইকেটে খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষ তো বটেই, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও হিমশিম খান। স্বাগতিক হওয়ার সুবিধার পুরোটা আদায় করায় অধিকাংশ সময় অবশ্য ফল আসে বাংলাদেশের পক্ষেই। কিন্তু দেশের বাইরে গেলেই পরিস্থিতি বদলে যায়। কঠিন সংগ্রাম করতে হয়, ইনিংস হার এড়ানোই কঠিন হয়ে যায়। বিব্রতকর এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গেল কয়েক বছরে দেশের ক্রিকেটের যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তাতে বদল আনতে চান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সময়েই মূলত বদলে যায় দেশের ক্রিকেটের সংস্কৃতি। তার নির্দেশনায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তৈরি করা শুরু হয় অতিরিক্ত টার্নিং উইকেট। যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও খেলতে অভ্যস্ত নন। অবশ্য তাতে সুফলও মিলেছে। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে জয় পাওয়া গেছে। কিন্তু বাস্তবতা টের পাওয়া গেছে বিদেশের মাটিতে। সাদা পোশাকে প্রতি সফরেই রীতিমতো নাস্তানুবাদ হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। হারের চেয়ে হারের ধরন আরও বিব্রতকর। দেশের মাটিতে যে স্পিনাররা ভুরিভুরি উইকেট পান, দেশের বাইরে উইকেটের দেখা পেতে হাহাকার করতে হয়েছে তাদের।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এ সংস্কৃতি বদলের কথাই শোনালেন কোচ ডমিঙ্গো, অন্যথায় নিজেদের মধ্যেও বাজে ধারণা তৈরি হবে বলে মনে করেন তিনি, ‘আপনি স্পিনিং উইকেট চান কিন্তু আমাদের ভালো উইকেটে খেলাটাও শিখতে হবে যাতে আমাদের পেসাররাও ম্যাচে থাকে। যদি আমরা কঠিন উইকেটে খেলি, তাহলে ব্যাটসম্যানরাও বড় সেঞ্চুরি করতে পারবে না। এতে বোলারদের মধ্যেও বাজে ধারণা হবে। তারা ভাববে, তারা খুব বড় বোলার, কারণ উইকেটে টার্ন হচ্ছে।’

দেশের বাইরে টেস্ট ম্যাচের কথা মাথায় রেখেই ভাবনায় বদল আনা উচিৎ বলে মনে করেন কোচ, ‘বাংলাদেশকে টেস্টে উন্নতি করতে হলে সবসময় স্পিনারদের নিয়ে খেলালে হবে না। যদি আমরা একটা পেসার নিয়ে খেলি, এরপর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গেলে আমাদের তিন পেসার কে হবে? তারা আমাদের মতো ক্রিকেট খেলে না। এটা একটা ভালো ভারসাম্য। আমরা দলের শক্তির অবস্থা জানি। বিশেষ করে স্পিনিং উইকেটে যখন আমরা অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলি... আমাদের অবশ্যই ভালো উইকেটে খেলা উচিৎ। না হলে দেশে ভালো করব কিন্তু বিদেশের মাটিতে নয়।’

হাথুরুসিংহের সময়ে স্বাভাবিকভাবেই একাদশে থাকত স্পিনারদের আধিক্য। পেসার হয়তো একজন থাকতেন নামকাওয়াস্তে। মাঝে মধ্যে দুই-চার ওভার বল করতেন। মূলত বলের শাইনটা (চকচকে ভাব) কমিয়ে দেওয়া হতো তার কাজ। বাকিটা করতেন ওই স্পিনাররা। তবে এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে একাদশে কমপক্ষে দুইজন পেসার থাকবে বলেই ইঙ্গিত দিলেন ডমিঙ্গো, ‘আমরা হয়তো দুই পেসার নিয়ে খেলব। আমার মনে হয় না এক পেসার নিয়ে খেললে কোনো সুবিধা দেবে। তিন পেসার নিয়ে খেলা আদর্শ হতো যদি সাত নম্বরে একজন ব্যাট করতে পারত। যখন সাইফউদ্দিন ফিট হবে, তখন সাত নম্বরে যে ব্যাট করতে পারে, পাশাপাশি ১০-১৫ ওভার বল করতে পারে, এমন কাউকে বেছে নিব। তাই আমরা হয়তো দুই পেসার নিয়েই নামব।’

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের এক পেসার নিয়ে মাঠে নামার নজির বেশ পুরনো। এমনকি বিশেষজ্ঞ পেসার ছাড়াও ম্যাচ খেলার উদাহরণ আছে দুইটি। তবে সংস্কৃতি বদলের চিন্তাই শুধু নয়, কৌশলগত কারণও উল্লেখ করেছেন কোচ, ‘সকাল ১০টার দিকে নেটেও কিছু ময়েশ্চার থাকে। সকালে প্রথম ১০-১২ ওভারে কিছুটা শীত থাকে, তাই আগামীকাল (শনিবার) কিছুটা কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি আমরা কাল শুরুতে বোলিং নিই, তাহলে পেসাররাই মূলত কার্যকর হয়ে উঠবে। উইকেটে যদি কিছু না থাকে, তাহলে আমাদের দুইজন পেসার লাগবে কাজটা করতে।’

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago