আন্তর্জাতিক সীমারেখায় মাতৃভাষা দিবস

‘আমরা এসেছি হৃদয়ের টানে’

বেনাপোলের নো ম্যানস ল্যান্ডে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন। ছবি: স্টার

“আমার এসেছি হৃদয়ের টানে। বার বার ছুটে আসি। দেশ ভাগ হলেও ভাষার পরিবর্তন হয়নি। আমরা ওপারে থাকলেও শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ সকল ভাষা সৈনিকের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।”

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বেনাপোলে অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কথাগুলো বললেন পশ্চিমবঙ্গের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক। আর তাকে স্বাগতম জানাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। 

দুই বাংলার হাজারো মানুষের শ্রদ্ধাঞ্জলিতে ভরে গেল ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমারেখার যশোরের বেনাপোলের নো ম্যানস ল্যান্ডে নির্মিত শহীদ বেদি। আলোচনা আর গানে-কবিতায় মাতোয়ারা হলো দুই বাংলার আকাশ-বাতাস।

প্রতি বছরের মতো আজ শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে দুই বাংলার বাসিন্দারা এক সঙ্গে মিলিত হয়ে পালন করছেন একুশে ফেব্রুয়ারি। দুই দেশের জাতীয় পতাকা, ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, আর ফুল দিয়ে সাজানো ছিলো পুরো এলাকা। বেনাপোল চেকপোস্টে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্যদিয়ে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান উভয় দেশের জনপ্রতিনিধিসহ সরকারি কর্মকর্তারা।

এরপর ভারতীয় মন্ত্রীসহ নেতাদের নিয়ে চেকপোস্টে তৈরি করা মঞ্চে শহীদদের স্মরণে কোরআন তিলাওয়াত ও গীতা পাঠের পর শুরু হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

সভায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ভাষা আর স্বাধীনতার জন্য এতো ত্যাগের নজির পৃথিবীতে অন্য কারোর নেই। এ জন্য আপনারা গর্বিত জাতি। ভাষার টানে আমরা বাংলাদেশে ছুটে এসেছি একুশ উদযাপন করতে।”

প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের দুই দেশের মধ্যে উপস্থিত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ভিতকে আরো শক্ত করবে।”

আলোচনা সভা শেষে বেলা বারোটার দিকে উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পরিবেশনায় শুরু হয় একুশের কবিতা আবৃত্তি, গীতিনাট্য আর সংগীতানুষ্ঠান। সন্ধ্যা পর্যন্ত বেনাপোলে দুই বাংলার এ মিলনমেলার এ আয়োজন চলবে।

২০০২ সাল থেকে দুই বাংলার হাজারো মানুষের এই মিলনমেলা উদযাপিত হয়ে আসছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী, যশোরের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা পরিষদের সভাপতি রহিমা মণ্ডল, বনগাঁ পৌর মেয়র শংকর আঢ্য প্রমুখ।

 

Comments

The Daily Star  | English

'Frustrated, Yunus hints at quitting'

Frustrated over recent developments, Chief Adviser Prof Muhammad Yunus is considering stepping down, said sources familiar with what went down at the Chief Adviser’s Office and Jamuna yesterday.

1h ago