বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
১৯৯৯ সালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। ২০০০ সাল থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশ এ দিনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছে। প্রতি বছরের মতো এবারও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উদযাপন করছে ইউনেস্কো।
দিবসটি উপলক্ষে প্যারিসে ইউনেস্কো সদরদপ্তরে দিনব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ‘ল্যাঙ্গুয়েজ উইদাউট বর্ডার’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা।
সদস্য দেশগুলোতে ভাষা সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন এবং ভাষাগত বৈচিত্র্যকে সংরক্ষণের জন্য সংস্থাটি কাজ করে আসছে। ইন্টারনেট এবং মিডিয়ায় যেন ভাষাগত বৈচিত্র্য হারিয়ে না যায় এবং ভাষাকে কীভাবে আরো সহজ করা যায় সে বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।
ইউনেস্কোর কান্ট্রি অফিস এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ক্রিটিক্যাল হেরিটেজ যৌথভাবে সুদানের খারতুমে মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এসময় মাতৃভাষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দেশটির আঞ্চলিক ভাষার গানের সঙ্গে নাচসহ অন্যান্য কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে টুইটারে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট। ইইউর ২৪টি দাপ্তরিক ভাষা আছে এবং জোটের কাগজপত্র, আইনের ধারা এই ২৪টি ভাষায় অনূদিত হয় উল্লেখ করে তারা মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
Today is International Mother Language Day! Did you know there are 24 official EU languages? As every one of those can be translated into 23 others - at the Parliament there are no less than 552 possible language combinations! pic.twitter.com/BH88KCBNW2
— European Parliament (@Europarl_EN) February 21, 2020
ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে যুক্ত করেছে এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক ইনফরমেশন সেন্টার (এপনিক)। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বার্ষিক সম্মেলনের শেষ দিনে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করে তারা।
নয়াদিল্লিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আঞ্চলিক ভাষা সংরক্ষণ এবং ভাষার গুরুত্বের কথা তুলেন ধরেন ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু। বক্তব্য দানের সময় ২২টি ভাষায় কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে অন্যান্য ভাষা শেখার পাশাপাশি মাতৃভাষার চর্চা এবং প্রচারের জন্য আহ্বান জানানো হয়।
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, জাম্বিয়া থেকে আগত শিক্ষার্থীরা।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, অস্ট্রেলিয়া, ক্যামেরুন, মেক্সিকো, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো মিশন এবং জাতিসংঘ সচিবালয় ও ইউনেস্কোর নিউইয়র্ক অফিসকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়। পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে হাইকমিশন ও ভিয়েতনাম মিশনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
জাপানের টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে পালিত হয়েছে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা শহীদদের স্মরণে ইকেবুকুরো নিশিগুচি পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনার বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
Comments