সেঞ্চুরিয়ান আরভিনকে থামিয়ে দিনটা বাংলাদেশের করেন নাঈম

সকালের আর্দ্রতা কাজে লাগিয়ে তেতে উঠেছিলেন দুই পেসার। তাদের সামলে প্রিন্স মাসবাউরে আর ক্রেইগ আরভিনের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে জিম্বাবুয়ে, আভাস দেয় বড় রানের। তবে দারুণ বল করে অফ স্পিনার নাঈম হাসান তুলে নিতে থাকেন উইকেট, জিম্বাবুয়েকে রাখেন বেঁধে। সেই চাপ সামলেও ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে ফেলেছিলেন আরভিন। সবচেয়ে বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককেও শেষ বেলায় ছেঁটেছেন নাঈম।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সকালের আর্দ্রতা কাজে লাগিয়ে তেতে উঠেছিলেন দুই পেসার। তাদের সামলে প্রিন্স মাসবাউরে আর ক্রেইগ আরভিনের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে জিম্বাবুয়ে, আভাস দেয় বড় রানের। তবে দারুণ বল করে অফ স্পিনার নাঈম হাসান তুলে নিতে থাকেন উইকেট, জিম্বাবুয়েকে রাখেন বেঁধে। সেই চাপ সামলেও ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে ফেলেছিলেন আরভিন। সবচেয়ে বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককেও শেষ বেলায় ছেঁটেছেন নাঈম।

মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ৬ উইকেটে ২২৮ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনভর যা খেলা হয়েছে, তাতে দুদলই ছিল সমান তালে। শেষ বিকালে সেঞ্চুরিয়ান আরভিনের উইকেট নিয়ে নাঈম খানিকটা এগিয়ে রাখলেন বাংলাদেশকেই। ৬৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। পেসার আবু জায়েদ রাহি ৫১ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট।

সকালের প্রথম ঘণ্টায় জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলেও কেবল একটাই উইকেট নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ঘুরে দাঁড়িয়ে জিম্বাবুয়েকেই বরং দেখাচ্ছিল দাপটের আসনে। প্রিন্স মাসবাউরে আর ক্রেইগ আরভিনের দৃঢ়তায় বড় সংগ্রহের ভিতও পেয়ে গিয়েছিল তারা। কিন্তু ধৈর্য হারায়নি বাংলাদেশ। আবু জায়েদ রাহি যথারীতি আদায় করেছেন মুভমেন্ট, তুলেছেন উইকেট। ইবাদত হোসেন উইকেট না পেলেও ছিলেন ভীষণ নিখুঁত। উইকেটে প্রথম দিন স্পিনারদের জন্য তেমন কিছু না থাকলেও নাঈম হাসান তার অফ স্পিনে ছিলেন দারুণ। তুলনায় কিছুটা আলগা দেখিয়েছে তাইজুল ইসলামকে। ৭৫ রান দিয়ে উইকেটশূণ্য ছিলেন তিনি।

জিম্বাবুয়ের এই রানের ভিত মূলত দুই জুটিতেই।  দ্বিতীয় উইকেট মাসবাউরে-আরভিন আনেন ১১১ রান। চতুর্থ উইকেটে আরভিন-সিকান্দার রাজার জুটিতে আসে ৪০ রান। সারাদিনে আর কোন জুটিতে ঠিক আসর জমাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।

উইকেটে হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও সকালের আর্দ্রতা কেটে গেলে ব্যাটিংয়ের জন্য তা বেশ ভালো। এই আভাস পেয়ে সহজেই টস জিতে ব্যাট করতে যায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের দুই পেসারের নিখুঁত জায়গায় বোলিংয়ের মাঝে শুরুটা ভীষণ সতর্ক তাদের।

প্রথম চার ওভারেই আসেনি কোন রান। পঞ্চম ওভারে ওয়াইড থেকে রানের খাতা শুরু। অষ্টম ওভারে গিয়ে ৭ রানে গিয়ে প্রথম আঘাত। রাহি উইকেট নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করছিলেন একাধিকবার। অষ্টম ওভারের শেষ বলে খানিকটা আউটস্যুয়িং করে বেরিয়ে যাওয়া বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে কেভিন কাসুজা ক্যাচ দেন গালিতে।

গালিতে সে ক্যাচ নেওয়া নাঈম হাসান বল করতে এসেও দেখান ঝলক। তার আগে মাসবাউরে-আরভিনের দৃঢ়তায় প্রথম সেশনে আর কোন বিপর্যয় ছাড়াই পার করে দেয় সফরকারীরা। দ্বিতীয় সেশনে ফিরে নাঈম বারবার তৈরি করতে থাকেন সুযোগ। ৫৮ আর ৫৯ রানে তার বলে দুবার জীবন পান মাসবাউরে। একবার নিজেই ক্যাচ রাখতে পারেননি, আরেকবার স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্ত জমাতে পারেননি বল। তবে ক্ষতি হয়নি বিশেষ। ৬৪ রানে গিয়েই বাঁহাতি মাসবাউরে নাঈমকেই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন।

খানিক পরই আবার সাফল্য। জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ব্র্যান্ডন টেইলর আউট হন সবচেয়ে দায়িত্বহীন শটে। বাংলাদেশের বিপক্ষে হাজারের উপর রান করা টেইলর নাঈমকে অকারণে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল টেনে আনেন স্টাম্পে।

আরভিন তখনো ছিলেন অবিচল। ফিফটি পেরিয়ে দ্বিতীয় সেশনেও দলের ত্রাতা তিনি। চা-বিরতির পর ফিরে সিকান্দার রাজাকে নিয়ে এগুতে থাকেন তিনি। মনে হচ্ছিল জুটিতে বেশ জমে গেছে। কিন্তু নাঈমের স্পিনেই কুপোকাত রাজা। কাট করতে গিয়ে ১৮ রান করে  ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। এরপর টিমসেন মারুমাকে নিয়ে দিন পার করে দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন আরভিন। জুটি থিতু হতেই নতুন স্পেলে এসে রাহির আঘাত। দারুণ লেট স্যুয়িংয়ে ডানহাতি মারুমাকে এলবিডব্লিও করে ফেরত পাঠান রাহি।

অধিনায়কত্বের অভিষেকে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে রেজিস চাকাভাকে নিয়ে আরভিন তখনো সাবলীল। মনে হচ্ছিল দিন পার করে দিবেন তিনিই। দিনের একদম শেষ ভাগে করে বসেন ভুল। আবারও উইকেট নেওয়ার নায়ক নাঈম। তার বলে ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে মিস করেন আরভিন। বল তার প্যাডে লেগে চলে যায় স্টাম্পে। ২২৭ বলে ১৩ চারে ১০৭ রান করে ফিরে যান আরভিন। ৯ রান নিয়ে খেলা রেজিস চাকাবা ডোনাল্ড ট্রিপানোকে নিয়ে শুরু করবেন দ্বিতীয় দিনের খেলা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(প্রথম দিন শেষে)

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২২৮/৬ (মাসবাউরে ৬৪, কাসুজা ২, আরভিন ১০৭, টেইলর ১০, সিকান্দার ১৮, মারুমা ৭, চাকাবা ৯*, টিরিপানো ০*; ইবাদত ০/২৬, জায়েদ ২/৫১, নাঈম ৪/৬৮, তাইজুল ০/৭৫)।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago