জার্মান বন্দুকধারীর ‘হেটলিস্ট’-এ বাংলাদেশের নাম
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হ্যানওয়ের দুটি শিশা বারে বৃহস্পতিবার শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী বন্দুকধারীর হামলায় নয় জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের একজনের ওয়েবসাইটে ২৪ পৃষ্ঠার একটি ইশতেহার পেয়েছে পুলিশ। ইশতেহারে তিনি বাংলাদেশসহ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জনগণের প্রতি বর্ণবাদী ঘৃণা উগরে দিয়েছেন। দেশগুলোর জনগণকে নিশ্চিহ্ন করার কথাও ইশতেহারে লিখেছেন তিনি। তার ভাষ্য, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বিশ্বের জনসংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে।
শুক্রবার প্রসিকিউটর জেনারেল পিটার ফ্রাংক জানান, জার্মান গোপনীয়তা আইন অনুযায়ী টোবিয়াস আর (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হামলার সঙ্গে জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে তিনি উগ্র বর্ণবাদী ভিডিও এবং নানা ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রকাশ করতেন।
তিনি বলেন, “তার ওয়েবসাইটের হোম পেজে ভিডিও বার্তার সঙ্গে একটি ইশতেহার পাওয়া যায়। এর প্রতি পাতায় ছিল অসংলগ্ন চিন্তাভাবনা এবং অদ্ভুত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এগুলো থেকে তার উগ্র দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।”
ওয়েবসাইটে নিজেকে টোবিয়াস রথজেন নামে পরিচয় দিয়েছেন ওই ব্যক্তি। ঠিকানা অনুযায়ী বাড়িতে গিয়ে ওই ব্যক্তি এবং তার মায়ের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, শিশা বারে হামলার পর বাড়িতে নিজের মাকে হত্যা করেন তিনি। এরপর করেন আত্মহত্যা।
ওয়েবসাইটে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি নজরদারিতে থাকার কথা উল্লেখ করেছেন সন্দেহভাজন ওই হামলাকারী। নজরদারির কারণে কোনো নারীর সঙ্গে সম্পর্ক টিকাতে না পারার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
ওয়েবসাইটে তিনি লিখেন, “আমাদের মধ্যে এখন বহু জাতি, বর্ণ এবং সংস্কৃতির মানুষ আছে যারা সবসময়ই আমাদের জন্য ধ্বংসাত্মক।”
টাইমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিশর, ইসরায়েল, সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, সম্পূর্ণ আরব অঞ্চল, তুরস্ক, ইরাক, ইরান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া এবং ফিলিপাইনের নাম ওই ব্যক্তির ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন করা উচিত’ তালিকায় ছিল।
এ ঘটনায় বর্ণবাদের ‘বিষ’কে দায়ী করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। চ্যান্সেলরের সহকারী ওলাফ স্কলজ টুইটারে জানান, “নাৎসি একনায়কতন্ত্র অবসানের ৭৫ বছর পর আবারও রাজনৈতিক সন্ত্রাস শুরু হয়েছে।”
বন্দুকধারীর হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন তুর্কি অভিবাসী বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। জার্মান সরকারের যথাযথ তদন্তে হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য উঠে আসবে বলে আশাবাদী এরদোয়ান।
Comments