হাজারতম ম্যাচে রোনালদোর গোল, জিতল জুভেন্টাস
ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে পেশাদার ক্যারিয়ারের ১০০০তম ম্যাচ খেলতে নামবেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো আর গোল পাবেন না, তা কি হয়? হয় না। হয়নিও। ম্যাচের প্রথমার্ধে পর্তুগিজ তারকার লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যাওয়া জুভেন্টাস মাঠ ছাড়ল পূর্ণ পয়েন্ট নিয়েই। পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ফরোয়ার্ডের স্মরণীয় ম্যাচ জিতে ইতালিয়ান সিরি আ’র পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে নিজেদের অবস্থান মজবুত করল তুরিনের ওল্ড লেডিরা।
শনিবার রাতে স্পালের মাঠে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে মাউরিজিও সারির শিষ্যরা। জুভদের হয়ে অন্য গোলটি করেন অ্যারন রামসি। স্বাগতিকদের হয়ে ব্যবধান কমান আন্দ্রেয়া পেতানিয়া। চলতি মৌসুমের লিগে দুদলের আগের দেখায় ঘরের মাঠে জুভেন্টাস জিতেছিল ২-০ গোলে। ওই ম্যাচেও জালের ঠিকানা খুঁজে নিয়েছিলেন রোনালদো।
২০০২ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা শুরু করেছিলেন রোনালদো। নিজ দেশের ক্লাব স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে। এরপর গেল ১৮ বছর ধরে মাঠ মাতিয়ে আসছেন তিনি, দর্শকদের দিয়ে যাচ্ছেন বিনোদন, একের পর এক গড়ছেন রেকর্ড। জুভেন্টাসের জার্সিতে হাজারতম ম্যাচ খেলার আগে ক্লাব পর্যায়ে তিনি আলো ছড়িয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়েও। আর পর্তুগাল জাতীয় দলের জার্সি তো সেই ২০০৩ সাল থেকে এখনও তার গায়ে শোভা পাচ্ছে।
১০০০তম ম্যাচে ক্যারিয়ারের ৭২৫ নম্বর গোলটি করেছেন ৩৫ বছর বয়সী রোনালদো। পর্তুগালের হয়ে ১৬৪ ম্যাচে তার গোল ৯৯টি। আর ক্লাবে ৮৩৬ ম্যাচ খেলে ৬২৬ বার প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়েছেন তিনি।
মাইলফলক স্পর্শের ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই স্পালের জাল কাঁপান রোনালদো। কিন্তু অফসাইডের কারণে তা বাতিল করে দেন রেফারি। এরপর চেনা ছন্দ দেখাতে পারেনি জুভরা। উল্টো স্বাগতিক শিবির ঘুরে দাঁড়িয়ে বর্তমান লিগ চ্যাম্পিয়নদের বারকয়েক অস্বস্তিতে ফেলে।
৩৮তম মিনিটে পাওলো দিবালার শট পোস্টে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি অতিথিদের। তবে পরের মিনিটেই সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে দেন রোনালদো। ডানপ্রান্ত থেকে হুয়ান কুয়াদ্রাদোর ক্রসে পা ছুঁইয়ে গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
এই নিয়ে লিগের টানা ১১ ম্যাচে গোল পেলেন রোনালদো। জুভেন্টাসের ১২২ বছরের ইতিহাসে সিরি আ’তে টানা এত ম্যাচে গোল করার কীর্তি আর কেউ দেখাতে পারেননি! মোট ২১ গোল নিয়ে এবারের লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন পর্তুগিজ অধিনায়ক।
বিরতির পর খেলার ধার কিছুটা বাড়ে জুভেন্টাসের। ৬০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড দিবালার রক্ষণচেরা পাসে ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে স্পাল গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বল জালে পাঠান রামসি। নয় মিনিট পর সফল স্পট কিকে ম্যাচের স্কোরলাইন ২-১ করেন স্পাল ফরোয়ার্ড পেতানিয়া।
এরপর ম্যাচে আর কোনো গোল হয়নি। তবে রোনালদোকে কিছুটা দুর্ভাগা বলতেই হবে। ৮৫তম মিনিটে কুয়াদ্রাদো ফাউল হওয়ায় ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক পেয়েছিল জুভেন্টাস। রোনালদো নেন বাঁকানো শট। কিন্তু তা বারে লাগায় গোলবঞ্চিত হন তিনি।
এই জয়ে শীর্ষস্থান সুসংহত করেছে সিরি আ’র গেল আটবারের চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। ২৫ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৬০ পয়েন্ট। ২৪ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে আছে লাৎসিও। সমান ম্যাচে তৃতীয় স্থানে থাকা ইন্টার মিলানের সংগ্রহ ৫৪ পয়েন্ট।
Comments