দেশের চাহিদা মিটিয়ে বসুন্ধরার বিটুমিন রপ্তানিও হবে
ঢাকার কেরানীগঞ্জে দেশের বৃহত্তম বিটুমিন প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রায় ১৪৩ দশমিক সাত মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের এই প্লান্টের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা নয় লাখ টন।
হাইড্রোকার্বন ভিত্তিক পদার্থ বিটুমিন, সড়ক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে দেশে প্রতিবছর পাঁচ লাখ টন বিটুমিনের চাহিদা রয়েছে। এর প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানি করা হয়।
গতকাল শনিবার অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল কেরানীগঞ্জের পানগাঁও এলাকায় ৬৫ একর জমির ওপর স্থাপিত এই প্লান্টের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এখন আর আমাদের বিটুমিন আমদানি করার প্রয়োজন নেই। বসুন্ধরা দেশের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত বিটুমিট রপ্তানি করতে পারবে।”
সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ২২ হাজার কিলোমিটার সড়ক ও মহাসড়কের নির্মাণ এবং মেরামত কাজ চলছে। ফলে চাহিদা বাড়ছে বিটুমিনের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন তিন লাখ ৫৪ হাজার কিলোমিটার রাস্তা এখনো উন্নত করা হয়নি। এর মধ্যে এক লাখ পাঁচ হাজার কিলোমিটার রাস্তা বাঁধানো হয়েছে।
দেশের সবগুলো মহাসড়ক সম্প্রসারণ করে চার থেকে ছয় লেন করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ের রাস্তার উন্নয়ন কাজও চলছে। যে কারণে দেশে বিটুমিনের ব্যবহার বছরে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
বিটুমিন তৈরিতে প্রকৌশলীদের নির্ধারিত মান বজায় রাখার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বসুন্ধরা ২০২১ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে বিটুমিন রপ্তানি করতে চায়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে রাস্তার দৈর্ঘ্য কম। আমদানি করা বিটুমিন আমাদের দেশের আবহাওয়ার অনুকূল না হওয়ায় এগুলো দিয়ে তৈরি রাস্তা বর্ষাকালে নষ্ট হয়ে যায়। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের আবহাওয়া উপযুক্ত বিটুমিন প্রক্রিয়াজাত করবে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, নতুন কারখানাটি সরাসরি কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বসুন্ধরার উদ্যোগের প্রশংসা করেন নসরুল হামিদ। তিনি আরও বলেন, “বসুন্ধরা সত্যিকারের উদ্যোক্তার উদাহরণ।”
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান জানিয়েছেন, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশে ৩০টি কারখানা এবং দুটি বড় আবাসন প্রকল্প তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছরে একদিনের জন্যও হরতাল না হওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেক বেশি এগিয়েছে। এটাই দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বড় কারণ। বসুন্ধরা এই অঞ্চলে দেড় বছরের মধ্যে বিদ্যালয় স্থাপন করবে, যাতে স্থানীয়রা মানসম্মত শিক্ষা পেতে পারে।”
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী এম শামীম জেড বসুনিয়া এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ।
Comments