নাটকীয় জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল প্রোটিয়ারা

এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ ব্যবধানে সমতা টানল দক্ষিণ আফ্রিকা। জোহানেসবার্গে আগের ম্যাচে তারা হেরেছিল ১০৭ রানের বিশাল ব্যবধানে।
south africa
ছবি: আইসিসি

অধিনায়ক কুইন্টন ডি ককের ঝড়ো ব্যাটিং সত্ত্বেও মাঝারি সংগ্রহে আটকে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। এরপর ডেভিড ওয়ার্নার শক্ত হাতে ব্যাট ধরে দলটিকে দেখাচ্ছিলেন জয়ের স্বপ্ন। কিন্তু ডেথ ওভারে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে প্রোটিয়াদের নাটকীয় জয় এনে দিলেন কাগিসো রাবাদা, আইনরিখ নরকিয়া, লুঙ্গি এনগিডিরা।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পোর্ট এলিজাবেথে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১২ রানের দারুণ জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের ৪ উইকেটে ১৫৮ রানের জবাবে অ্যারন ফিঞ্চের দল পুরো ওভার খেলে থামে ৬ উইকেটে ১৪৬ রানে।

এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ১-১ ব্যবধানে সমতা টানল দক্ষিণ আফ্রিকা। জোহানেসবার্গে আগের ম্যাচে তারা হেরেছিল ১০৭ রানের বিশাল ব্যবধানে।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। অজি বোলারদের ওপর চড়াও হন ডি কক। দ্বিতীয় ওভারে প্যাট কামিন্সকে ২ ছক্কা মারেন তিনি। কেইন রিচার্ডসনের করা চতুর্থ ওভার থেকে আদায় করে নেন ২ চার। ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে আসা অ্যাডাম জ্যাম্পাকে চার-ছয় মেরে স্বাগত জানান প্রোটিয়া অধিনায়ক।

কিন্তু উইকেট হাতে থাকলেও পরবর্তীতে রান তোলার এই ধারা বজায় রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লের ছয় ওভার বিনা উইকেটে ৫৯ রান তোলা দলটি পরের ১৪ ওভারে যোগ করতে পারে মাত্র ৯৯ রান।

সপ্তম ওভারে লেগ কাটারে রিজা হেন্ড্রিকসকে ফিরিয়ে ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন রিচার্ডসন। সাবেক অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি বিদায় নেন থিতু হয়ে। ব্যাটে-বলে ঠিকভাবে সংযোগ ঘটাতে না পেরে শিকার হন কামিন্সের।

৩১ বলে ফিফটি ছোঁয়া ডি কক এরপর সঙ্গী হিসেবে পান রাসি ভ্যান ডার ডাসেনকে। দুজনে রানের চাকায় দম দিয়ে ২৮ বলে ৪০ রান যোগ করেন। তবে ডি কক ফিরে গেলে ছেদ পড়ে ছন্দে। পাঁচে নামা ডেভিড মিলারও ইনিংসের শেষভাগে হাত খুলতে ব্যর্থ হন।

ডি কক ৪৭ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭০ রান করেন। ভ্যান ডার ডাসেনের ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে ৩৭ রান। অস্ট্রেলিয়ার ডানহাতি পেসার রিচার্ডসন ২ উইকেট নেন ২১ রান খরচায়।

লক্ষ্য তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার শুরুটাও হয় আগ্রাসী। ওয়ার্নার খেলতে থাকেন তেড়েফুঁড়ে। তবে শুরুর ধারাটা বজায় রাখতে পারেননি তিনি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে ভুগতে হয়েছে সঙ্গীর অভাবেও। তাই ইনিংস শেষ পর্যন্ত একপ্রান্ত আগলে অপরাজিত থাকলেও তার ৫৬ বলে ৬৭ রানের ইনিংটি গেছে বিফলে। ওয়ার্নারের ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ১ ছয়।

হাতে ৭ উইকেট নিয়ে শেষ চার ওভারে ৩২ রান দরকার ছিল অজিদের। ম্যাচের পাল্লা হেলে ছিল তাদের দিকেই। ঠিক তখনই জ্বলে ওঠেন প্রোটিয়া পেসাররা। ১৭তম ওভারে রাবাদা দেন ৭ রান। পরের ওভারে এনগিডি ৫ রান দিয়ে আউট করেন মিচেল মার্শকে।

১৯তম ওভারে আক্রমণে ফিরে ৩ রান দিয়ে ম্যাথু ওয়েডকে শিকার করেন রাবাদা। তাতে শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার দাঁড়ায় ১৭ রান। সেসময় নরকিয়া করেন আরেকটি দুর্দান্ত ওভার। অ্যাশটন অ্যাগারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মাত্র ৪ রান খরচ করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আনন্দে ভাসান তিনি।

আগামী বুধবার কেপটাউনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে দুদল। ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৫৮/৪ (ডি কক ৭০, হেন্ড্রিকস ১৪, ডু প্লেসি ১৫, ভ্যান ডার ডাসেন ৩৭, মিলার ১১*, ভ্যান বিলিয়ন ৭*; স্টার্ক ০/৩৮, কামিন্স ১/৩১, রিচার্ডসন ২/২১, জ্যাম্পা ১/৩৭, অ্যাগার ০/২৮)

অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ১৪৬/৬ (ওয়ার্নার ৬৭*, ফিঞ্চ ১৪, স্মিথ ২৯, কেয়ারি ১৪, মার্শ ৬, ওয়েড ১, অ্যাগার ১, স্টার্ক ২*; রাবাদা ১/২৭, নরকিয়া ১/২৪, এনগিডি ৩/৪১, প্রিটোরিয়াস ১/২৯, শামসি ০/১৭)।

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ১২ রানে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা।

ম্যাচসেরা: কুইন্টন ডি কক।

Comments