‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে আমার ওপর দায় চাপানো হচ্ছে’
নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর ২৩ বছর পর তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে ‘হত্যা নয় আত্মহত্যা’ করেছিলেন সালমান শাহ। সেখানে নাম এসেছে জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের। শাবনূর বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস করছেন। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে শাবনূরের মোবাইল ফোনে কথা হয় পিবিআই’র তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পরে।
সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে আপনার নাম এসেছে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
এটা তো সিম্পল বিষয়, আমার সঙ্গে যদি আদৌ সম্পর্ক থাকতো, তবে সালমানের মরে যাওয়ার কথা না। কারো সঙ্গে যদি কারো সম্পর্ক হয়, তবে সে মরবে কিসের জন্য, সে-তো বাঁচতে চাইবে। যদি ঝগড়াও হয় তার স্ত্রীর সঙ্গে আর তার যদি আমার সঙ্গে ও রকম কিছু থাকতো, তাহলে তো সে আমার কাছে আসতো, সে মরলো কেন?
বলা হচ্ছে ডাবিংয়ের সময় সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা আপনাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলেন।
যখন কোনো সিনেমার ডাবিং হয়, তখন হাজারটা লোক ডাবিং ফ্লোরে থাকে। সেখানে কি আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যাবে? এটাতো কোনো কথাই হলো না। সেখানে মাইক অন থাকে। আর এসব সিলি ব্যাপার নিয়ে তারা ঝগড়াঝাটি করবে, সেটা আমার বিশ্বাসই হয় না।
যখন আমি সালমানের সঙ্গে কাজ করেছিলাম, তখন আমারো কিছু ভক্ত ছিল। যদি ব্যাপারটা সত্যি হতো তাহলে আমি আর শাবনূর থাকতে পারতাম না। এতো রিউমারের পরে প্রথমেই পাবলিক আমাকে ছি ছি করতো। দুই নম্বর কথা আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেত। যদি এই ঘটনা সত্যিই হতো তবে পাবলিক আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিত। সালমান শাহের মৃত্যুর পরে পাবলিক তো আমাকে কোনোদিনই সাপোর্ট করতো না। আমি ধ্বংস হয়ে যেতাম।
সালমানের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিল?
ও আমার কো-আর্টিস্ট। ইন্ডাস্ট্রিতে এতদিন কাজ করছি, পত্র-পত্রিকায় অনেক গসিপিং হতেই পারে আর্টিস্টদের নিয়ে। এটা সারাজীবনই হয়েছে, ভালো-মন্দ সবাই লেখে। কিছু মানুষ ভালো লেখে, কিছু মানুষ ইয়েলো জার্নালিজম করে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে গসিপিংটা বেশি। আমাকে নিয়ে গশিপিং না করে যদি বাইরের একজন মানুষকে নিয়ে করে, এটা তো মানুষ পড়বে না। আমাদের নিয়ে গসিপিং হয় যেন মানুষ পড়ে।
সালমান শাহ মারা গেছে বলেই জিনিসটা এতো লাইমলাইটে আসছে। বেঁচে থাকলে কিন্তু এতো কিছু হতো না। যাই হোক, সালমানের স্ত্রী যদি গসিপিংয়ে কান দিয়ে কিছু বলেই থাকেন, সেটা তো তার নিজস্ব ব্যাপার। তার মধ্যে তো আর আমি ছিলাম না। তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে, না কী হয়েছে এটা তো তাদের নিজস্ব বিষয়। আমার জানার বিষয় না। তা ছাড়া এতদিন কেন আসলো না যে তারা আমার জন্য ঝগড়া করেছে? সত্যি বলতে তাদের পরিবারে কী হয়েছে আমি তার কিছুই জানি না। তারা আমাকে নিয়ে ঝগড়া করলো কি না এটা তো আমার ধারণারই বাইরে। কেন ঝগড়া করবে আমাকে নিয়ে? আমি তো তাদের ফ্যামিলিতে থার্ড পারসন।
সামিরার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?
সালমান ছিল আমার কো-আর্টিস্ট, আমার ভালো বন্ধু। সামিরাও আমার ভালো বন্ধু ছিল। আমি যতদূর জানি সালমানের সঙ্গে সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক ছিল তার স্ত্রীর। এখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সাধারণ কোনো কারণেও ঝগড়া হতে পারে। আমার প্রসঙ্গ সেখানে আসলো আর সেটাই সত্যি হয়ে গেল— বিষয়টা তো তেমন নয়।
পিবিআই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে রাতে ফোন দেওয়ার পরে সালমান আপনাকে ফোন করতে নিষেধ করেছেন। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথাবার্তা। সালমানকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম। কো-আর্টিস্ট হিসেবে ভালো সম্পর্ক ছিল। আমার আর কিছু বলার নেই। একজন মৃত মানুষকে নিয়ে এত গসিপ! আমি দুঃখিত, নিন্দা জানাই। নির্দোষ মানুষকে দোষ দেওয়া ঠিক না। এটা অন্যায়। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে আমার ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। সালমানের সঙ্গে আমার সহশিল্পী হিসেবে কাজের বাইরে অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল না।
তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কী হয়েছে আমার জানার কথা না, আমি তো থার্ড পারসন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ।
Comments