বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের হ্যাটট্রিক শিরোপা

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ফাইনালে প্রথম দুই দিনে একক আধিপত্য ছিল দক্ষিণাঞ্চলের। তবে তৃতীয় দিনে বোলারদের সৌজন্যে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছিল পূর্বাঞ্চল। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি দলটি। ১০৫ রানের বড় ব্যবধানেই হেরেছে তারা। ফলে টানা তৃতীয় বারের মতো এ আসরের শিরোপা জিতেছে দক্ষিণাঞ্চল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতায় ৩৫৪ রানের বড় লক্ষ্যই পায় পূর্বাঞ্চল। এর আগে নিজেদের শেষ ম্যাচে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে শেষ দিনে প্রায় এক সেশনেই ২১১ রানের লক্ষ্যে রোমাঞ্চকর এক জয় পেয়েছিল দলটি। এ কারণেই এদিন আলাদা নজর ছিল তাদের দিকে। নাটকীয় ফলাফল এদিনও প্রত্যাশা করেছিল অনেকেই। কিন্তু এমন কিছুই হয়নি। মাহমুদুল হাসান লিমন ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হওয়ায় বড় হারই মানতে হয় তাদের।
লক্ষ্য তাড়ায় এদিন দলীয় ৩৩ রানেই টপ অর্ডারের তিন উইকেট খুইয়ে বসে পূর্বাঞ্চল। চাপে পড়ে যায় তারা তখনই। তবে চতুর্থ উইকেটে আফিফ হোসেন ধ্রুবর সঙ্গে ৮৫ রানের জুটিতে প্রাথমিক চাপ সামলে নিয়েছিলেন মাহমুদুল। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই আবার নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ফলে ৬৮.৪ ওভারে ২৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮১ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদুল। ১০৪ বলে ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। জাকির হাসানের ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন পেসার শফিউল ইসলাম ও স্পিনার মেহেদী হাসান। দুইজনই পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া ফরহাদ রেজার শিকার ২টি।
দিনের শুরুতে আগের দিনের ৫ উইকেটে ১২৫ নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিল দক্ষিণাচল। এদিন শেষ ২টি উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে আর ১৫ রান যোগ করতে পারে তারা। আগের দিনে ৪১ রানে অপরাজিত থাকা মেহেদী তুলে নেন তার হাফসেঞ্চুরি। ব্যক্তিগত ৫৩ রানে হাসান মাহমুদের বলে আউট হন তিনি। পূর্বাঞ্চলের হয়ে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান ও আবু হায়দার রনি। ২টি উইকেট নিয়েছেন রুয়েল মিয়া।
বিসিএলে অবশ্য বরাবরই দক্ষিণাঞ্চল রাজত্ব করে থাকে। মোট আটবার অনুষ্ঠিত হওয়া এ আসরের পাঁচবারই শিরোপা ঘরে তুলেছে তারা। একবার রানার্সআপ হয়েছে দলটি। এছাড়া মধ্যাঞ্চল দুইবার ও উত্তরাঞ্চল একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ৪৮৬
পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ২৭৩
দক্ষিণাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংস: ৩৫.১ ওভারে ১৪০ (ফজলে ১, এনামুল ১০, মাহমুদউল্লাহ ১৭, শামসুর ১৬, সোহান ৮, আল-আমিন ৮, রেজা ৩, মেহেদী ৫৩, শফিউল ৫, রাজ্জাক ৩, আল-আমিন ০; হাসান ৪/৩৫, রনি ৪/৫২, রুয়েল ২/২২, আশরাফুল ০/৬, আফিফ ০/১০, সাকলাইন ০/০, মাহমুদুল ০/১)।
পূর্বাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৫৪) ৬৮.৪ ওভারে ২৪৮ (পিনাক ১৬, আশরাফুল ৫, মাহমুদুল ৮১, ইমরুল ৩, আফিফ ৩১, তানজিদ ১৭, জাকির ৪২, রনি ১২, সাকলাইন ১১, হাসান ১৯, রুয়েল ২*; শফিউল ৩/৫৬, আল-আমিন ১/৩১, রেজা ২/৫১, রাজ্জাক ০/১৮, মেহেদী ৩/৬৬, মাহমুদউল্লাহ ১/২০)।
ফলাফল: দক্ষিণাঞ্চল ইনিংস ও ১০৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ফরহাদ রেজা
ম্যান অব দ্য সিরিজ: এনামুল হক বিজয়
ব্যাটসম্যান অব দ্য সিরিজ: এনামুল হক বিজয়
বোলার অব দ্য সিরিজ: আব্দুর রাজ্জাক
বিসিএলের রোল অব অনার
মৌসুম |
চ্যাম্পিয়ন |
রানার্সআপ |
২০১২-১৩ |
মধ্যাঞ্চল |
উত্তরাঞ্চল |
২০১৩-১৪ |
দক্ষিণাঞ্চল |
উত্তরাঞ্চল |
২০১৪-১৫ |
দক্ষিণাঞ্চল |
পূর্বাঞ্চল |
২০১৫-১৬ |
মধ্যাঞ্চল |
পূর্বাঞ্চল |
২০১৬-১৭ |
উত্তরাঞ্চল |
দক্ষিণাঞ্চল |
২০১৭-১৮ |
দক্ষিণাঞ্চল |
উত্তরাঞ্চল |
২০১৮-১৯ |
দক্ষিণাঞ্চল |
পূর্বাঞ্চল |
২০১৯-২০ |
দক্ষিণাঞ্চল |
পূর্বাঞ্চল |
Comments