সমন্বিত নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হবে গুচ্ছ ভিত্তিতে

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ভর্তি পরীক্ষা নয়, বরং চারটি আলাদা গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন উপাচার্যরা। সমমনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চারটি গুচ্ছে ভাগ করে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
UGC-2.jpg
ইউজিসি কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিং করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ভর্তি পরীক্ষা নয়, বরং চারটি আলাদা গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা। সমমনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চারটি গুচ্ছে ভাগ করে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।

এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আরেকটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। বড় পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকিরা এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেবে।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কার্যালয়ে উপাচার্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে ইউজিসির চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। বেলা সোয়া তিনটার দিকে শুরু হওয়া এ বৈঠকে ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অংশ নেন।

ব্রিফিংয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান বলেন, গত বছর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে একত্রে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে, সেভাবেই চারটি আলাদা গুচ্ছে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কৃষি ছাড়া বাকি গুচ্ছগুলো হলো- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং সাধারণ।

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, যেহেতু পাঁচটি বড় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় আসছে না, তাদের লজিস্টিক সাপোর্ট ছাড়া, বিশেষ করে সিট বণ্টনে সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও কিছু কিছু সমস্যা হতে পারে, যেগুলো নিয়ে সার্বিক আলোচনার পরেই আমরা গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষার ফরম্যাটে গিয়েছি।

কাজী শহীদুল্লাহ আরও বলেন, এজন্য ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগমকে সমন্বয়কারী হিসেবে রেখে বিষয়গুলো মনিটর করার জন্য কমিটি করে দেওয়া হবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে কমিটিগুলো করার জন্য আমরা আবার বসব। এসব গুচ্ছের আলাদা আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য থাকবে, তাই তাদের আলাদাভাবেও বসতে হবে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ চূড়ান্ত বিষয়গুলো জানা যাবে।

প্রক্রিয়াটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘায়িত হবে কেন, আমরা বলেছি এই বছর থেকেই আমরা নতুন একটা কিছুতে যাব। আমরা প্রোগ্রেস করছি, যেহেতু পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে একমত হয়নি, তাই আমাদের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হয়েছে। মার্চের শুরু থেকেই টেকনিক্যাল কমিটিগুলো বসে সব ঠিক করবে। গুচ্ছ পরীক্ষার বিষয়ে আমরা সবাই নীতিগতভাবে একমত হয়েছি।

বড় যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আসেনি, তাদের আনতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয় একেকটি গুচ্ছের পরীক্ষার নেতৃত্ব দিবে যেটাও ওই সময় ঠিক করা হবে। আমরা চাই সবাই আসুক, যারা কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় আসতে রাজি হয়নি, তারাও যদি গুচ্ছ পরীক্ষায় আসতে চায় আমরা স্বাগত জানাব।

সর্বমোট কয়টি পরীক্ষা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, জগন্নাথের মতো সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় যেগুলো রয়েছে, সেগুলোতে তিনটি করে পরীক্ষা হবে। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের জন্য আলাদা তিনটা পরীক্ষার লাগবে। এছাড়া অন্য গুচ্ছগুলোতে একটি করে মোট ছয়টি পরীক্ষা হতে পারে। আরা যারা ডিসিপ্লিন পরিবর্তন করতে চায়, তাদের জন্যও ব্যবস্থা থাকবে।

ইউজিসি চেয়ারম্যান তাঁর বক্তব্যে সম্মতি জানিয়ে বলেন, আমাদের মূল টার্গেট শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমিয়ে আনা। আগে যেখানে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হতো, কোনোটাতে চার-পাঁচদিন ধরে হতো, সেখানে পরীক্ষার সংখ্যা যত কমিয়ে আনা যায়, আমরা সেই চেষ্টা করব।

প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র ডিন হিসেবে ছয়টা পরীক্ষা নিয়েছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে সারা দেশে একযোগে পরীক্ষা নিয়েছি, সেখানে তো প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। তার মানে এই না যে, ফাঁস হতে পারে না, ফাঁস হবে কি না সেটা একমাত্র আল্লাহ বলতে পারবে। তবে আমরা আমাদের যথাযথ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

তিনি বলেন, বুটেক্স, মেরিটাইম, এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বা প্রকৌশল গুচ্ছের আওতায় আসতে পারে।

এ সময় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম ও অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago