১৮ বছরের যুদ্ধে শান্তি আসেনি, চুক্তিতে আসবে?
আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কাতারের দোহায় চুক্তিতে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান প্রতিনিধিরা।
আজ শনিবার দোহার চুক্তি অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং তালেবান নেতারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কাতার, তুরস্ক, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের প্রতিনিধিরা। মার্কিন-তালেবান দুই পক্ষই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী তালেবান নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় আল-কায়েদা বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনকে কোনো ধরনের তৎপরতা চালাতে দেয়া হবে না।
অন্যদিকে চুক্তির কিছুক্ষণ আগে মার্কিন ও ন্যাটো জোট যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৪ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে। আফগানিস্তানে ন্যাটোভুক্ত দেশের প্রায় ১৭ হাজার সেনা রয়েছেন যার মধ্যে ৮ হাজার মার্কিন সেনা।
এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ১৮ বছর ধরে চলা আফগান যুদ্ধ শেষ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আদতেই কি শান্তি ফিরছে আফগানিস্তানে?
১৮ বছরের যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান রাজনৈতিক অস্থিরতায় টালমাটাল। নির্বাচনের পাঁচ মাস পর আশরাফ ঘানিকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জয়ী ঘোষণা করা হয়।
গত বছর নির্বাচন ঘিরে তালেবান-আফগান সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। তালেবান হুমকিতে দুই দফা পেছানো হয় ভোট।
জাতিসংঘ জানায়, গত বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে ২ হাজার ৫৬৩ জন নিহত হয়েছেন। জুলাইতেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫০০ বেসামরিক মানুষ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জঙ্গিদের তুলনায় আফগান ও মার্কিন বাহিনীর হাতে বেশি বেসামরিক মানুষের প্রাণ গেছে।
শান্তি চুক্তি আলোচনা শুরু হওয়ার পর, ২০১৩ সালের পর গত বছর (২০১৯ সালে) তালিবান ঘাঁটি লক্ষ্য করে সবচেয়ে বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
চুক্তি অনুযায়ী, আফগানিস্তানের কারাগার থেকে ৫০০০ তালেবানকে মুক্তি দেয়া হবে। তবে এটি এখনও অজানা আফগান সরকার এই চুক্তিতে রাজি কিনা। এছাড়াও অস্ত্র জমা দেয়ার পক্ষে কতজন তালেবান জঙ্গি একমত হবে সেটি নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।
এছাড়াও, চুক্তিতে এটি স্পষ্ট নয়, আফগানিস্তানে নারী অধিকার নিশ্চিত হবে কিনা।
এদিকে, এ চুক্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আফগানরা। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে অনেকেই মার্কিন ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় খুশি হয়েছেন। অনেকেই শঙ্কিত এতে করে আবারও তালিবান শাসন ফিরে আসতে পারে।
২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার ও পেন্টাগনে আল কায়েদার হামলা চালানোর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে হামলা চালায়।
Comments