তিস্তা পাড়ের শতবর্ষী নারী তারামনি দাস আর নেই
লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ের কর্মোদ্যমী শতবর্ষী নারী তারামনি দাস মারা গেছেন। আজ রোববার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার চাকলারহাট গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১২ বছর।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, জীবনের শেষ বয়স পর্যন্তও কাজ করার প্রবল ইচ্ছা একটুও কমেনি তারামনি দাসের। ভোরে উঠে ধারালো দাঁ হাতে নিয়ে বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। নিজে ঠিকমতো চলতে না পারলেও সবসময় পরিবারের অন্যদের খেয়াল রাখতেন। আশপাশের গ্রামের নারীরাও তাকে দেখতে আসতেন। তার কাছ থেকে অন্যরা কাজের অনুপ্রেরণা পেতেন।
আগে তিনি থাকতেন উপজেলার মহিষখোঁচা গ্রামে। বছরখানেক আগে চাকলারহাট গ্রামে জমি কিনে নতুন ঘর তৈরি করেছিলেন। পরিবার নিয়ে নতুন ঘরেই থাকতেন।
২০১৫ সালের এপ্রিলে তারামনি দাসকে নিয়ে ‘১০৭ বছর বয়সী তারামনি দাসের বেঁচে থাকার লড়াই (107-yr-old Taramoni Das' struggles to survive)’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দ্য ডেইলি স্টার।
প্রতিবেদন দেখে রায়হান সুলতানা তমা নামে ঢাকার এক নারী তার ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন। মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত তমাই তার ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করেন।
তারামনি দাসের ছেলে মনিরাম দাস বলেন, আমার বয়স ৮২ বছর। এ বয়সে এসে আমি কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। অথচ মা ছিলেন কর্মবীর, কর্মচঞ্চল। মৃত্যুর আগের দিনও মা বাঁশ দিয়ে জিনিস তৈরির চেষ্টা করেছিলেন।’
‘মা সারাজীবনই আমাদের জন্য করে গেলেন,’ বলে কাঁদতে শুরু করেন তিনি।
প্রতিবেশী প্রভাত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার বয়স ৯৩ বছর। বয়সের ভারে ২০ বছর আগে আমি বাঁশের কাজ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু, তারামনি কাজ ছাড়েননি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কাজের মধ্যে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। তারামনি ছিলেন নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা।’
Comments