চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ‘নেশা’ পাহাড় কাটা

পাহাড় কাটার দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা ১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার জরিমানা পরিশোধ করার আগেই আবারও সীতাকুণ্ড এলাকার জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কেটেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
Ctg Hill Razing
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কেটেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ছবি: স্টার

পাহাড় কাটার দায়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের করা ১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকার জরিমানা পরিশোধ করার আগেই আবারও সীতাকুণ্ড এলাকার জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড় কেটেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

নগরীর বায়েজিদ থেকে সীতাকুণ্ডের সলিমপুর দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নির্মাণাধীন লিংক রোড প্রকল্পে হিল কাটিং ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান লঙ্ঘন করায় এ বছরের জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর ১০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল।

জরিমানার পর সেটা মওকুফ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরে আপিল করেছে সিডিএ। এর মধ্যে নতুন করে পাহাড় কাটল তারা।

জরিমানার পাশাপাশি পাহাড় না কাটার জন্য কঠোরভাবে সিডিএ’কে বলা হলেও মাত্র মাসখানেকের মধ্যে সলিমপুর প্রকল্পের জন্য নির্মাণ করা বেজ ক্যাম্পের পেছনে আবারও প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট পাহাড় কেটেছে সিডিএ।

সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রামের একটি দল পাহাড় কাটার প্রমাণ পেয়েছে উক্ত এলাকায়। পাহাড় কাটার মাটি দিয়ে পাশের একটি নিচু ভূমি ভরাটের প্রমাণও পেয়েছে দলটি।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক জমির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বেজ ক্যাম্পের ঠিক পেছনে নতুন করে প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট পাহাড় কাটা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে সিডিএ’র সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

খুব শিগগির সিডিএ’কে এ বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন।

২০১৭ সালেও একবার সিডিএ’কে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।

লিংক রোড প্রজেক্টে সিডিএ’র ভয়াবহ পাহাড় কাটা দেখতে জানুয়ারিতে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাবুদ্দিন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একেএম রফিক আহাম্মদ।

পরিদর্শন শেষে রফিক আহাম্মদ বলেন, ‘সিডিএ ছয় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ১৮টি পাহাড় কেটেছে জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় যা তারা না করলেও পারত। চাইলে সহজে বিকল্প পাওয়া যেত।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু তা নয়, হিল কাটিং ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানে তাদেরকে বলা হয়েছিল ২৬ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে পাহাড় কাটতে। কিন্তু, তারা কেটেছে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে। এ পাহাড়গুলো যেহেতু বালির পাহাড়, বর্ষায় যেকোনো সময় তা ধ্বসে পড়ে প্রাণহানি ঘটানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’

নতুন করে পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তারা অ্যালাইনমেন্টের বাইরে গিয়ে কখনো পাহাড় কাটেননি।

‘যেখানে পাহাড় কাটা হয়েছে সেগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে কে পাহাড় কাটছে সেটা দেখার বিষয় সিডিএ’র নয়।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, জরিমানা করেও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে পাহাড় কাটা থামানো যাচ্ছে না। মনে হয়, পাহাড় কাটা তাদের নেশা!

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago