‘৭ মার্চের ভাষণ যুগ যুগ ধরে বিশ্ববাসীকে মুক্তির চেতনায় উজ্জীবিত করবে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আবেদনকে চিরন্তন আখ্যায়িত করে বলেছেন, ‘এটি সমসাময়িক কালেও যেমন আগামীতেও তেমনি, যুগযুগ ধরে দেশের মানুষের পাশাপাশি বিশ্ববাসীকে মুক্তির চেতনায় উজ্জীবিত করবে।’
বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আবেদনকে চিরন্তন আখ্যায়িত করে বলেছেন, ‘এটি সমসাময়িক কালেও যেমন আগামীতেও তেমনি, যুগযুগ ধরে দেশের মানুষের পাশাপাশি বিশ্ববাসীকে মুক্তির চেতনায় উজ্জীবিত করবে।’

তিনি বলেন, ‘৪৯ বছর ধরে জাতির পিতার ভাষণই একমাত্র ভাষণ যেটা সমগ্র পৃথিবীতে এখনও আবেদন রেখে যাচ্ছে। আর এই ভাষণ যুগ যুগ ধরে শুধু এদেশেরই নয়, সারা বিশ্বের মানুষকে উজ্জীবিত করবে।’

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আজ শনিবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

‘৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন’, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ভাষণ যে কতবার, কত দিন, কত ঘণ্টা, কত মিনিট বেজেছে, কত মানুষ এই ভাষণ শুনেছে, তা কেউ হিসাব করে বের করতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় মুজিব বর্ষে দেশে আর কেউ গৃহহীন থাকবে না বলে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা তার সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষার সম্প্রসারণ ও স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে আসার উদ্যোগগুলো তুলে ধরে বলেন, ‘মুজিব বর্ষে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে— এটা হতে পারে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীরও দেশের ও জাতির জন্য একটা দায়িত্ব আছে। সেটা যদি করতে পারেন, তবে তাই হবে স্বার্থকতা। ধরে নিন এটাই আপনাদের কাছে আমার একটা দাবি। আপনারা ঘর করে দেবেন। প্রয়োজনে টাকা আমি দেব।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভায় দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম ও মুহম্মদ ফারুক খান এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বক্তব্য রাখেন।

এ ছাড়াও, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং মাহবুব-উল-আলম হানিফ, কেন্দ্রিয় সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফি এবং উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচিও বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’— কবিতাটি আবৃত্তি করেন শিমুল মুস্তাফা। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ও দল মুজিব বর্ষ উদযাপনে অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং সেখানে অনেক অর্থও ব্যয় হবে। তবে, মুজিব বর্ষে দেশের সকল মানুষকে বাসগৃহের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারলে এর চেয়ে বড় কাজ আর হতে পারেনা।

‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন, আমার জীবনের একমাত্র কামনা বাংলার মানুষ যেন অন্ন পায়, বস্ত্র পায়, উন্নত জীবন পায়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতা সবসময়ই বলেছেন, এই বাংলাদেশের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদাগুলো তিনি নিশ্চিত করতে চান। এজন্য স্বাধীনতার পর তিনি যে সংবিধান দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানেও এই মৌলিক চাহিদা নিশ্চিতের কথা বলেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এখনও আমাদের দেশে নদী ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে যায়। এখনও কিছু মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন। আমি চাই এই মুজিব বর্ষের ভেতরেই বাংলাদেশের একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’

‘আমার অনুরোধ থাকবে, আওয়ামী লীগের এত নেতাকর্মী, এত আদর্শের সৈনিক, আপনারা যার যার নিজের গ্রামে, নিজের এলাকায়, নিজেরা একটু খোঁজ নেন, কয়টা মানুষ গৃহহীন বা ভূমিহীন আছে। তাদেরকে আমরা ঘর করে দেব’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago