পদ্মায় নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮, খোঁজ মেলেনি নববধূর
রাজশাহী শহরের পাশে শ্রীরামপুর এলাকায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ রুবাইয়া আক্তার স্বর্ণা (১৩) নামের আরেক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা আট জনে দাঁড়াল। নিখোঁজ রয়েছেন নববধু।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বউভাতের অনুষ্ঠান শেষে শ্রীরামপুরে ফেরার সময় পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকা দুটিতে বর-কনেসহ মোট ৪১ যাত্রী ছিলেন।
বিআইডব্লিউটিএ, স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও পুলিশের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উদ্ধারকাজ চলছে। স্থানীয় মাঝি ও জেলেদের একটি দল জাল টেনে নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করতে সাহায্য করছেন।
এ ঘটনায় শনিবার রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান আবু আসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, লম্বায় প্রায় ১৭ ফুট এবং ৫ ফুট প্রস্থের ডুবে যাওয়া ওই নৌকা দুটি মূলত মাছ ধরার কাজে ব্যবহার হতো। নিয়ম ভেঙে নৌকা দুটিতে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দুই নৌকার মাঝিই ছিলেন অদক্ষ।
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার সময় আবহাওয়াও ছিল দুর্যোগপূর্ণ। ঝড়ো হাওয়া বইছিল। নৌকা দুটির একটিতেও লাইফ জ্যাকেট ছিল না।’
২০১৮ সালে পদ্মার রাজশাহী এলাকায় কাজ শুরু করে নৌ-পুলিশ । তখন থেকেই পদ্মায় চলাচলকারী নৌযানগুলোর নিবন্ধন ও মাঝিদের তালিকাকরণ হয় বলে জানান নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নৌকা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকা দুটির এক জন মাঝিও তালিকাভুক্ত না। একজনের বয়স ১৬ বছর।’
ওই দুই নৌকার মাঝিরা জানান, নৌকাগুলো ভাড়া করার সময় তারা যাত্রীদেরকে বড় নৌকা ভাড়া করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু, খরচ কম হবে ভেবে বরের পরিবারের লোকজন ছোট নৌকা খুঁজছিলেন।
অন্য ২০ জনের সাঙ্গে একটি বালিবাহী নৌযানে চড়ে প্রাণে বেঁচেছেন বর আসাদুজ্জামান রুমন। তিনি জানান, টাকা বাঁচানোর জন্য নয়। সন্ধ্যায় নদীরঘাটে বড় নৌকা না পেয়ে বাধ্য হয়েই ছোট নৌকা ভাড়া করতে হয়েছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বউভাতের অনুষ্ঠান শেষে শ্রীরামপুরে ফেরার সময় নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে। সাঁতরে পাড়ে এসে দুই নৌকার মাঝি বিষয়টি জানানোর পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। এখন পর্যন্ত আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন কনে সুইটি আক্তার পূর্ণিমা।
Comments