গবেষণা: স্বর্ণকারদের বেশিরভাগই ৬০ বছর বাঁচেন না

যেখানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৩ বছর, সেখানে স্বর্ণকার হিসেবে যারা কাজ করেন তাদের বেশিরভাগই ৬০ বছরে পা দিতে পারেন না। স্বর্ণকারদের ৫৫ ভাগই ভোগেন হৃদরোগে, মারা যান ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ অথবা স্ট্রোক করে।
রয়টার্স ফাইল ছবি

যেখানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৩ বছর, সেখানে স্বর্ণকার হিসেবে যারা কাজ করেন তাদের বেশিরভাগই ৬০ বছরে পা দিতে পারেন না। স্বর্ণকারদের ৫৫ ভাগই ভোগেন হৃদরোগে, মারা যান ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ অথবা স্ট্রোক করে।

আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) একটি কর্মশালায় একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশের সময় এসব তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশে স্বর্ণকারদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে এই গবেষণাটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস (ডিপিএইচআই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামানসহ কয়েকজন গবেষক।

গবেষণাপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় তিন লাখের মতো স্বর্ণকার রয়েছেন। তবে এর মধ্য থেকে সর্বশেষ মারা যাওয়া ২০ জন স্বর্ণকারের তথ্য নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, লালবাগ ও তাঁতি বাজার, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা ও টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় ওইসব স্বর্ণকারের স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে গবেষণাটি করা হয়।

তবে এই অল্প সংখ্যক কেস স্টাডি করে উপসংহারে পৌঁছানোয় উপস্থিত অতিথিদের কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, মৃত স্বর্ণকারদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কার্ডিওভাস্কুলার বা সিভিডি রোগে ভুগছিলেন। ২০ শতাংশ ছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত। তাদের গড় আয়ু ৫৯ বছর। ৭৫ শতাংশ স্বর্ণকার দুই বা ততোধিক অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস, ৩৫ শতাংশ হৃদরোগ এবং ২০ শতাংশ কিডনি রোগে ভুগছিলেন।

সম্প্রতি মারা যাওয়া এসব স্বর্ণকারের ৭০ শতাংশ নিয়মিত ধূমপান করতেন এবং ২০ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাক গ্রহণ করতেন আর ৫০ শতাংশের মদ্যপানের অভ্যাস ছিল। এসব বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি অসংক্রামক রোগগুলো যাচাইয়ে নিয়মিত স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম আয়োজনের সুপারিশ করেন গবেষকেরা।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া গবেষকদের ধন্যবাদ জানালেও ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে তথ্য নিয়ে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা করার জন্য আহ্বান জানান।

আর সভাপতির বক্তব্যে ডিপিএইচআই বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ শরিফুল ইসলাম এত ছোট পরিসরে গবেষণার কারণ হিসেবে বলেন, তারা যখন গবেষণাটি শুরু করেন, তখন তাদের কাছে অনেক কিছুই অজানা ছিল।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, আইসিডিডিআর,বির ইমেরিটাস গবেষক মো. ইউনুস প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহযোগী প্রধান গবেষক ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তানভীর ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago