চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে ছিটকে দিয়ে শেষ আটে অ্যাতলেতিকো
প্রথমার্ধের শেষ দিকে এগিয়ে গেল লিভারপুল। তবে অ্যাতলেতিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক আর ব্যবধান বাড়াতে দিলেন না। ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে চার মিনিটের মধ্যে বল জালে জড়িয়ে শেষ আটে নাম লেখানোর সব বন্দোবস্ত করে ফেলেছিল লিভারপুল। কিন্তু নাটকীয়তার শুরু এরপরই! মার্কোস লরেন্তে করলেন জোড়া গোল, নিশানা ভেদ করলেন আলভারো মোরাতাও। রোমাঞ্চকর জয়ে অ্যাতলেতিকো কাটল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট।
বুধবার রাতে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব প্রতিযোগিতার শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে লিভারপুলের মাঠে ৩-২ গোলে জিতেছে দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছিল স্প্যানিশ ক্লাবটি। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলের অগ্রগামিতায় পরের পর্বে নাম লিখিয়েছে তারা। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গেল আসরের শিরোপা জয়ী ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল বিদায় নিয়েছে শেষ ষোলো থেকেই।
অ্যানফিল্ডে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে অ্যাতলেতিকোর উপর আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় লিভারপুল। কিন্তু ওবলাক যেন চীনের প্রাচীরে পরিণত হয়েছিলেন। তাকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যভেদ করার কোনো উপায়ই খুঁজে পাচ্ছিলেন না মোহামেদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনো, সাদিও মানেরা। একের পর এক দুর্দান্ত সেভে দলকে ম্যাচে রাখেন স্লোভেনিয়ার এই গোলরক্ষক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেবল একবারই তাকে পরাস্ত করা গেছে। ৪৩তম মিনিটে অ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলেইনের ক্রসে হেড করে জর্জিনিয়ো ওয়াইনালডাম এগিয়ে নেন অলরেডদের। ৬৬তম মিনিটে আরও একবার পরাস্ত হন ওবলাক। কিন্তু খুব কাছ থেকে অ্যান্ড্রু রবার্টসনের হেড ফেরে ক্রসবারে লেগে।
অ্যাতলেতিকো যে গোলের সুযোগ পায়নি, তা নয়। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত তারা। দিয়েগো কস্তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আর দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে সাউল নিগেজ বল লিভারপুলের জালেও পাঠান। কিন্তু অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। দুই লেগ মিলিয়ে তখন ১-১ ব্যবধানে সমতা থাকায় অবধারিতভাবে লড়াই গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
৯৪তম মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে শেষ আটের সম্ভাবনা জোরালো করে লিভারপুল। ওয়াইনালডামের ক্রসে তার হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসলে ফিরতি শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। তিন মিনিট পরই অবশ্য ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচের সমীকরণ ও মোড় দুই-ই পাল্টে দেয় অতিথিরা। লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের ভুলে বল পেয়ে হোয়াও ফেলিক্স পাস দেন লরেন্তেকে। এই বদলি মিডফিল্ডার দূরপাল্লার মাটি কামড়ানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন।
ম্যাচে যদিও তখন ২-১ ব্যবধানে লিভারপুল এগিয়ে, কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে গোল করায় দুই লেগ মিলিয়ে পরের পর্বে জায়গা করে নেওয়ার হিসাবে কার্যত এগিয়ে অ্যাতলেতিকোই। স্বাগতিকরা অবশ্য একটি গোল পেলেই পরের পর্বে জায়গা করে নিত। তবে সালাহ-মানেদের হতাশায় ডুবিয়ে উল্টো আরও দুবার গোল উৎসব করে সফরকারীরা। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আরেকটি দূরপাল্লার শটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন লরেন্তে। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষণ আগে বাঁ পায়ের কোণাকুণি শটে জাল কাঁপান আরেক বদলি মোরাতা।
রাতের আরেক ম্যাচে নিজেদের মাঠে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইও (পিএসজি)। প্রথম লেগে জার্মান ক্লাবটির মাঠে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল ফরাসি লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
Comments