শীর্ষ খবর

কুমিল্লার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের নামে হরিলুট

কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের নামে সরকারি টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। প্রয়োজনের চেয়ে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি দামে কেনা হলেও ব্যবহার না জানায় মেশিনগুলো নষ্ট হচ্ছে।
Biometric_attendance_machine
ছবি: ইউএনবি

কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপনের নামে সরকারি টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। প্রয়োজনের চেয়ে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি দামে কেনা হলেও ব্যবহার না জানায় মেশিনগুলো নষ্ট হচ্ছে।

সরেজমিন ব্রাহ্মণপাড়ার মনোহরপুর, অলুয়া, পূর্ব চণ্ডীপুর, পশ্চিম চণ্ডীপুর, আছাদনগর, মগ পুকুরপাড়, বুড়িচংয়ের উত্তর বুড়িচং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে মেশিনগুলো দেয়ালে ঝুলতে দেখা গেছে। সেখানের শিক্ষকরা মেশিনটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র মতে, কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলায় দুই হাজার ১৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে শুধু সদর উপজেলার প্রায় সব স্কুল সার্ভারের আওতায় এসেছে। অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, তিতাস, হোমনা, দাউদকান্দি, লাকসাম, বরুড়াসহ কয়েকটি উপজেলায় মেশিন কেনার বিষয়ে।

বুড়িচং উপজেলার জয়নাল আবেদীন নামে এক ব্যক্তি মেশিন কেনা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন। দুদক এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে চিঠি দিয়েছে।

ব্রাহ্মণপাড়ার মনোহরপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম তার স্কুলের মেশিনটি চালুর বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন জানিয়েছেন। সেখানে তিনি লেখেন, গত অর্থবছরে মেশিন স্থাপনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে ১৬ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু মেশিনটি কোনো কাজে লাগছে না।

ব্রাহ্মণপাড়ার মনোহরপুর স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা বলেন, ‘আমাদের নিকট কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয়নি। উপর থেকে একটি মেশিন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। চার হাজার টাকার মেশিনে ১৬ হাজার টাকা নিয়েছে। এটা কোনো কাজ করছে না।’

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম মুন্সী বলেন, ‘মেশিনের সমস্যা হলে দূরের লোকজনকে পাওয়া যাবে না। তাই কাছের লোকজন মেশিন সরবরাহ করেছে। এখনো মেশিনটি সার্ভারে সংযুক্ত হয়নি।’

ব্রাহ্মণপাড়ার ১০৮টি স্কুলে মেশিন সরবরাহকারীদের একজন সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি উজ্জ্বল চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমি একা নই। মমিনসহ কয়েকজন মেশিন দিয়েছি। আমি ১৬ হাজার করে নিয়েছি। অন্যদের বিষয়ে বলতে পারবো না।’

মেশিন সার্ভারে সংযুক্ত ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মেশিন দিয়েছি, একদিনের একটা প্রশিক্ষণ করতে পারি। ইন্টারনেট নেই তাই সার্ভারে যুক্ত হবে না। তারা পেন ড্রাইভে করে তাদের হাজিরা উপজেলায় দিয়ে যাবে।’

দাউদকান্দি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এগুলো আমরা জানি না। স্কুল কমিটি নিজেরা মেশিন কিনেছে।’

দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিম মিয়া সরকার বলেন, ‘মেশিন আমরা ক্রয় করিনি। তবে অন্য উপজেলায় যেভাবে হয়েছে আমাদের এখানেও সেভাবে হয়েছে। আমরা চাকরি করি। তাই বিস্তারিত কিছু বলতে পারবো না।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘শুধু সদরের অধিকাংশ স্কুল সার্ভারের আওতায় এসেছে। স্কুল কমিটির মেশিন ক্রয়ের নিয়ম রয়েছে। কয়েকটি উপজেলায় অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

AL won't accept change in polls schedule if deadline is crossed: Quader

Awami League will not accept any change to the election schedule if it crosses the deadline set by the constitution, the party's General Secretary Obaidul Quader said today. Alleging that BNP wants to obstruct the polls, Quader said, "They want to question the election. Now they are openly obstructing, openly taking a stand against the election.

12m ago