নির্বিঘ্নে চলাফেরা করছেন ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকা অনেক বিদেশফেরত
করোনাভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে বিশ্বের সব দেশেই চলছে জোর প্রচেষ্টা। বাংলাদেশে বিদেশ থেকে কেউ এলে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছে সরকার। কিন্তু অনেকেই এই নির্দেশনা মানছেন না। দ্য ডেইলি স্টারের জেলা সংবাদদাতাদের দুজন সরেজমিন ঘুরে জানান, রোগের আপাত উপসর্গ না থাকায় বিদেশফেরতদের অনেকেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চাইছেন না।
চাঁদপুর ও মানিকগঞ্জে বিদেশফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার খবর প্রকাশ হলেও সেখানকার অনেকেই যথাযথভাবে মানছেন না সরকারি নির্দেশনা। চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় এক হাজার সাত জন বিদেশ থেকে ফিরেছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মনির হোসেন তালুকদার বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশ থেকে আসা লোকেদের তালিকা করছেন।
সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের তিন জন সপ্তাহখানেক আগে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। আজ শনিবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টার প্রতিনিধি সরেজমিনে সেখানে গিয়ে এক জনকে বাড়িতে পেলেও গেলেও অপর দুজনকে পাননি।
মানিকগঞ্জে শুক্রবার সকালে কয়েকটি গ্রামে পরিদর্শন করে দেখা যায়, ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকা বিদেশফেরতরা নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাসলি গ্রামের ২২ বছর বয়সী জুয়েল রানা তিন দিন আগে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। জুয়েলকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বাড়িতে আলাদা থাকতে বললেও তিনি বাইরে বিভিন্ন কাজে বের হচ্ছেন বলে জানান। তার দাবি, করোনাভাইরাসের উপসর্গ না থাকায় তিনি বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন।
একই গ্রামের ২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আসলামও সপ্তাহখানেক আগে দেশে ফিরেছেন। বাড়িতে গিয়ে তাকে গবাদি পশুদের খাওয়ানো এবং ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
ওই গ্রামেরই দুলাল হোসেন ১০ মার্চ দুবাই থেকে ফিরেছেন। ১২ মার্চ বিকেলে তিনি বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছেন বলে জানান তার মা হাজিরান বেগম।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হোম কোয়ারেন্টাইন থাকা বিদেশফেরতরা বাড়ির বাইরে নির্বিঘ্নে চলাফেরা করছে, এমন কোনও তথ্য তার কাছে নেই।
তার ভাষ্য, একা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
Comments