হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাচ্ছে স্কুল

সিলেটের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাস্ক পড়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: শেখ নাসির

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিশ্বের অনেক দেশই যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে সেটি করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থাপনা দেখতে রাজধানীর ১০টি স্কুলে যায়। বেশির ভাগ স্কুলেই হাত ধোয়ার জন্য সাবান নেই,  টয়লেটেরও করুণ দশা। দেখা যায়, স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীরা খুব কাছাকাছি বসছে এবং খেলছে।

নিরাপদে থাকার জন্য কী করতে হবে সে বিষয়ে তাদের কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। তারা ঝুঁকিপূর্ণ কিছু করছে কি না, তার ওপর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরদারিও খুবই কম। এই শিক্ষার্থীরা যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে তাদের মাধ্যমে তাদের সহপাঠী, পরিবার এমনকি আরও বড় পরিসরে ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। যদি টয়লেটেও সাবান সরবরাহ করার নিশ্চয়তা দিতে না পারি তাহলে কেন আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখছি তা বোধগম্য না।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিএসএইচই)- মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের বারবার হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তবে শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠান প্রশাসনের প্রশ্ন, অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ ছাড়াই সবার জন্য এত পরিমাণে হাত ধোয়ার সাবান সরবরাহ করা কী করে সম্ভব! সরকারি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে মোটেই উদ্বিগ্ন নন। একজন জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তার দাবি, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে না পারাটা মোটেই ‘অস্বাভাবিক’ না। তার মতে, অভিভাবকদের উচিত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া। ডিএসএইচই শিক্ষার্থীদের জনসমাগম এড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ, কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কি জনসমাগমের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না?

১১ মার্চ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ৩৯টি দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে বা বন্ধ করেছে। ইউনেস্কোর হিসাবে, এর মধ্যে ২২টি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি বাংলাদেশ এখনও উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছায়নি। যার কারণে, আমাদের সুযোগ আছে এই ভাইরাসটি যাতে আমাদের দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষিত মহামারীটিকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না এবং আমরা হয়ত খুব বেশি দিন নিরাপদ নাও থাকতে পারি। আমাদের অন্য দেশগুলোর ভুল থেকে যেমন শিখতে হবে, তেমনি শিখতে হবে তাদের কার্যকর ব্যবস্থাগুলো থেকেও। ভাইরাসের বিস্তার রোধে আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যবস্থা না নিয়ে, যাতে কেউ আক্রান্ত না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সরকারের উচিত স্বাস্থ্য বিষয়ক ও শিক্ষা বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া। শিক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে থাকে এবং ভাইরাসের বাহক না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া।

 

Comments

The Daily Star  | English
Nagad faces ACC raid

ACC raids Nagad HQ over hiring irregularities

"During the drive, the ACC team found initial evidence of irregularities in the recruitment process"

2h ago