তাইবুরের সেঞ্চুরিতে দোলেশ্বরের শুভ সূচনা
এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন জুনায়েদ সিদ্দিকি। শেষ পর্যন্ত। কিন্তু পেলেন না সতীর্থদের সহায়তা। ফলে হারতেই হলো ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। তাইবুর রহমানের সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রথম ম্যাচে নাটকীয় জয় পেল প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। ব্রাদার্সকে ৮ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শুভ সূচনা করল দলটি।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে দোলেশ্বরের ২৩৮ রানের জবাবে ২ বল বাকি থাকতে ব্রাদার্স অলআউট হয় ২৩০ রানে।
আজ রোববার টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা দোলেশ্বরের ইনিংস ছিল তাইবুরময়। এ ব্যাটসম্যানের দায়িত্বশীল ইনিংসেই লড়াই করার মতো পুঁজি মেলে দলটির। দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা যখন আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত, তাইবুর তখন ইনিংস মেরামত করেন, পাশাপাশি রানের চাকাও রাখেন সচল। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে খেলেন হার না মানা ১১০ রানের ইনিংস। ৯৪ বল খেলে মারেন ৭টি চার ও ৫টি ছক্কা।
শুরুতে এক প্রান্তে ওপেনার ইমরানুজ্জামান সাবলীল ব্যাট চালালেও আরেক প্রান্তে ধুঁকতে থাকেন জাতীয় দলের ওপেনার সাইফ হাসান। ২৯ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৪ রান করে রাহাতুল ফেরদৌসের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। এরপর স্কোরবোর্ডে ১৬ রান যোগ হতে আর দুটি উইকেট হারায় দোলেশ্বর। ফলে বেশ চাপে পড়ে জায় দলটি। এরপর অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুবের সঙ্গে দলের ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন তাইবুর। চতুর্থ উইকেটে তারা যোগ করেন ৪৮ রান।
এ জুটি ভাঙলে শরিফুল্লাহকে নিয়ে ৩২ রানের জুটিতে ফের প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন তাইবুর। এরপর অবশ্য দ্রুত সময়ের মধ্যে দুটি উইকেট হারিয়ে আবার চাপে পড়ে তারা।
সপ্তম উইকেটে এনামুল হক জুনিয়রকে নিয়ে লড়াই করেন তাইবুর। ৬২ রানের জুটি গড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রান করে দোলেশ্বর।
লক্ষ্য তাড়ায় ব্রাদার্সের অবস্থাও ছিল প্রায় একই। এক প্রান্তে ওপেনার জুনায়েদ দারুণ ব্যাট চালালেও তুষার ইমরান ছাড়া আর কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি তাকে। ফলে জয়ও পায়নি দলটি। তবে ম্যাচটা এক সময় তাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। ২৭ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। মূলত তুষারের সঙ্গে জুনায়েদের ৯২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটিতেই কক্ষপথে ছিল তারা। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই ৯ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারালে চাপে পড়ে যায় তারা।
এরপর অবশ্য রাহাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে ৫৮ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন জুনায়েদ। জয়ের সম্ভাবনা জোরালো হয়েছিল তাতে। কিন্তু শেষ ৫ উইকেট তারা হারায় মাত্র ৩৬ রান তুলতেই। গুটিয়ে যায় ২৩০ রানে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া জুনায়েদ মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। ১২৫ বলে ৬ চারের সাহায্যে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৭ রান করেন তিনি। তুষারের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান।
দোলেশ্বরের পক্ষে ৩৬ রানের খরচায় ৪ উইকেট নেন রেজাউর রহমান রাজা। ২টি উইকেট পান মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৩৮/৭ (সাইফ ৪, ইমরান ৩৪, ফজলে ৬, মার্শাল ২৬, তাইবুর ১১০*, শরিফুল্লাহ ১৩, শামিম ৪, এনামুল ২৩, রাব্বি ২*; বাবু ১/৩৫, রাহাতুল ১/৩৭, নাঈম ০/২৩, সাকলাইন ২/২৭, শাহাজাদা ০/৬১, মাইশুকুর ১/১৯, তুহিন ১/৩২)।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪৯.৪ ওভারে ২৩০ (মিজানুর ১৭, জুনায়েদ ৯৭, মাইশুকুর ৩, তুষার ৫১, তুহিন ০, জাহিদুজ্জামান ৪, রাহাতুল ৩১, শাহাজাদা ১৩, বাবু ২, নাঈম ১, সাকলাইন ০; রাব্বি ১/৫৫, শামিম ১/৩৫, রাজা ৩/৩৬, শরিফুল্লাহ ২/৪৭, রায়হান ০/২৭, এনামুল ০/১২, সাইফ ১/১৫)।
ফল: প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ৮ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তাইবুর রহমান (প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব)।
Comments