২১ দিনের লকডাউন চ্যালেঞ্জে ভারত

মুম্বাইয়ে লকডাউনের নিয়ম ভাঙায় এক অটোরিকশা চালককে মারতে উদ্যত কর্তব্যরত পুলিশ। ২৫ মার্চ ২০২০। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আজ থেকে ভারতে শুরু হচ্ছে ২১ দিনের লকডাউন। কিন্তু, প্রায় ১৩৪ কোটি মানুষের দেশটি কি এই দীর্ঘ লকডাউনের জন্য প্রস্তুত?

ভারতে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫৬২ জন এবং মারা গেছেন ১১ জন। দেশটিতে ব্যাপক আকারে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারতের নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথ সিএনএনকে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় ভারত প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে এবং জনসাধারণের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ রাখছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পরলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ২০১১ সালে ভারতের সরকারি এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটির বিভিন্ন শহরে ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ বস্তিতে বসবাস করে। যেখানে বেশিরভাগ ঘরেই টয়লেট বা পানির সরবরাহ নেই। বাসিন্দাদের ব্যবহার করতে হয় সমন্বিত টয়লেট এবং পানির কল।

ভারতে গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাস করে ৪৫৫ জন। যেখানে বিশ্ব ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করে ৬০ জন। ঘনবসতির কারণে দেশটিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে কায়িক শ্রমজীবীর সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। যার মধ্যে প্রায় ১২ কোটি মানুষ কাজ করে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে। ২১ দিনের লকডাউন এই শ্রেণীর মানুষদের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তার প্রদেশের ১৫ লাখ দিনমজুরের প্রত্যেককে ১ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যাতে তারা তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণ করতে পারে।

দুর্বলতা রয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য খাতেও। দেশের কিছু অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবার মান ব্যাপক উন্নত হলেও, পুরো দেশের চিত্র এক নয়। বিশ্বে গড়ে যেখানে জিডিপির ১০ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে খরচ করা হয়, সেখানে ভারতের গড় তিন দশমিক ৬৬ শতাংশ। ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ওসি আব্রাহামের মতে, ভারতে সংক্রামক রোগের চিকিৎসা করার জন্য আনুষ্ঠানিক কাঠামোগত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ আছেন ৫০ থেকে ৬০ জন।

ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতিটি প্রদেশেই স্বাস্থ্য সুবিধা বাড়ানোর জন্য সরকার কাজ করছে।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

14h ago