বরগুনায় থানা হাজতে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, ওসিসহ সাময়িক বরখাস্ত ২
বরগুনার আমতলী থানা হাজত থেকে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদার (৫৫)এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, দাবিকৃত তিন লাখ টাকা না পেয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে পুলিশ। আর পুলিশ বলছে, আত্মহত্যা করেছেন শানু হাওলাদার।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও ডিউটি অফিসার এএসআই আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।
শানু হাওলাদারের স্ত্রী ঝর্ণা বেগম ও ছেলে সাকিব হোসেন জানান, গত বছর ৩ নভেম্বর দুর্বৃত্তরা পশ্চিম কলাগাছিয়া গ্রামের কৃষক ইব্রাহীমকে হত্যা করে। ওই মামলায় গত সোমবার রাতে শানু হাওলাদারকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় তিন লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শানু হাওলাদারকে নির্যাতন করা হয় বলে দাবি করেছে পরিবার।
সাকিব জানান, মঙ্গলবার ওসি আবুল বাশারকে ১০ হাজার টাকা দেন তিনি। কিন্তু তারপরও নির্যাতন থামেনি এবং পরিবারের লোকজন দেখা করতে চাইলে থানা থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
আমতলী থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, শানু হাওলাদার বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬ টার দিকে ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা জানায়। ফিরে এসে এক ফাঁকে হাজত খানার ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। কিন্তু হাজত খানায় কোনো ফ্যান নেই সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জনের কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। টাকা না দেয়ায় তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান তিনি।
শানু হাওলাদারের মৃত্যুর খবরে স্বজনেরা থানায় প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। এসময় সংবাদকর্মীদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
খবর পেয়ে বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন পিপিএম আমতলী থানায় আসেন। এসময় দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও ডিউটি অফিসার এএসআই আরিফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন তিনি।
তিনি জানান, ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, শানু হাওলাদারের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে না।
Comments