নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী ১০ গাড়ি জব্দ
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ওষুধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি ও পচনশীল পণ্যবাহী পরিবহণ চলার অনুমতি রয়েছে। তবে, পণ্যবাহী যানবাহনে কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না বলে নির্দেশনা রয়েছে। একইসঙ্গে, ২৬ মার্চ থেকে টানা ১০ দিনের সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময়ে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কিন্তু, এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ছোট গাড়িতে করে নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে। সরকারি আদেশ অমান্য করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে কিছুসংখ্যক ছোট পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক চলাচল করতে দেখা গেছে। যেগুলোতে যাত্রী বহন করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। পরে, বেশ কয়েকটি পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। একইসঙ্গে তারা যানবাহনগুলোকে জব্দ করেন।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
পোশাক কারখানায় কাজ করা এক দম্পতি জানান, ১০ দিনের ছুটি পাওয়ায় তারা শিশুসন্তানকে নিয়ে ঢাকার আশুলিয়া থেকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুণবাহা গ্রামে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সকাল ৯টার দিকে সাভারের নবীনগর থেকে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে একটি ট্রাকে করে পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেন তারা। সকাল ১০টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা ট্রাকটি জব্দ করে। পরে, এই দম্পতিসহ অন্যান্য যাত্রীরা পায়ে হেঁটে পাটুরিয়ার দিকে রওনা হন।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই ঢাকার দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়। পিকআপ ভ্যানে ১৮-২০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের কয়েকজন জানান, তারা সবাই গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বাড়ি ঝিনাইদহে। কারখানা ছুটি হওয়ায় পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে তারা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন।
নাসরীন আক্তার নামে এক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘কারখানা বন্ধ। টঙ্গীতে থাকলে অনেক খরচ। এই খরচ কে দেবে? বাধ্য হয়েই বাড়ি যাচ্ছি।’
জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) গোলাম আম্বিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যাত্রীবহনকারী যান চলাচল বন্ধ আছে। সরকারি আদেশ অমান্য করায়, ১০টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘তবে, নির্দেশনা অনুযায়ী, ওষুধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি ও পচনশীল পণ্যবহনকারী ট্রাক বা কাভার্ডভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স ও সংবাদপত্রের গাড়ি যথারীতি চলবে’, বলেন তিনি।
এ ছাড়া, চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Comments