নিজের তৈরি মাস্ক বিতরণ করছেন স্কুল শিক্ষক
বগুড়ার ধুনট উপজেলার বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক ফৌজিয়া বিথী। দেশে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর নিজ খরচে, নিজের সেলাই মেশিনে তৈরি করেছেন ৬০০ মাস্ক। এগুলো বিতরণ করেছেন এলাকার দরিদ্র মানুষদের মাঝে।
বিথী বলেন, ‘এলাকার দরিদ্র মানুষের মাস্ক কেনার সামর্থ্য নেই। কিন্তু, ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও জীবিকার তাগিদে তাদের বাইরে বের হতে হচ্ছে। আমি এসব মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেছি।’
ধুনট বাজারের মুদি দোকানদার ফজলুল হক বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রার্দুভাব শুরু হওয়ার পর ধুনট বাজারের রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে নিজের হাতে তৈরি করা মাস্ক বিতরণ করতেন ওই শিক্ষিক।
বিথী গ্রামে গ্রামে গিয়ে নারীদের মাঝেও মাস্ক বিতরণ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
এসব মাস্ক তৈরিতে আগে ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়েছেন তিনি। তারপর ভালো মানের ভয়েল কাপড়, পেস্টিং পেপার, রাবার ও ভেন্টিলেটর কাপড় দিয়ে ঘরে বসে নিজ হাতে এগুলো সেলাই করেছেন।
ধুনট উপজেলা প্রশাসনকে ৫০০ মাস্ক তৈরি করে দিয়েছেন বিথী।
এ প্রসঙ্গে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ফৌজিয়া বিথী বিনা পারিশ্রমিকে ৫০০ ভালো মানের মাস্ক বানিয়ে দিয়েছেন।’
এছাড়াও, ‘মানুষ স্বজন’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ২০০, ‘আমরা ধুনটবাসী’ সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ২৫০টি মাস্ক তৈরি করে দিয়েছেন তিনি।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা ধুনটবাসী’র সভাপতি আমিনুর জামান বকুল জানান, ‘বিথী আন্টি বিনা পারিশ্রমিকে আমাদের ২৫০টি মাস্ক তৈরি করে দিয়েছেন, যা আমরা দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করেছি।’
ফৌজিয়া বীথি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। আমার যতটুকু সাধ্য আছে সেই অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামের মানুষের যে কোনো বিপদে আমার সাধ্যমত পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।’
বিথী ২০০০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। একই বছরে ধুনটের বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিক হিসাবে যোগদান করেন।
Comments