রিভিউ সাফল্যে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

চোখের দেখায় যা-ই ভাবা হোক না কেন, পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে ডিআরএস ব্যবহারে সফলতা পাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড তো বটেই, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ। ক্রিকইনফোর এই জরিপ অবশ্য কেবল টেস্ট ক্রিকেটের পরিসংখ্যান নিয়ে।

আধুনিক ক্রিকেটের অনেক কিছুই প্রযুক্তি নির্ভর। তাই ব্যাট-বল হাতে ভালো খেলার পাশাপাশি প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে ফায়দা তুলে নেওয়াও শিখতে হয় নিখুঁতভাবে। কারণ, কে না জানে ক্রিকেটে একটা সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে সবকিছু! তাই ডিআরএসের (আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা পদ্ধতি) সঠিক ব্যবহারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর চোখের দেখায় যা-ই ভাবা হোক না কেন, পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে ডিআরএস ব্যবহারে সফলতা পাওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড তো বটেই, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ।

২০০৮ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার টেস্ট ম্যাচ দিয়ে ডিআরএসের সূচনার পর একাধিকবার নিয়ম ও সংখ্যা বদলে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে একটি স্থায়ী সিদ্ধান্তে আসে আইসিসি। বর্তমানে টেস্ট ক্রিকেটে প্রতি ৮০ ওভারে ও সীমিত ওভারে ম্যাচে একবার করে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে দলগুলো। ওই সময় থেকে এ পর্যন্ত নেওয়া সবগুলো রিভিউয়ের ফল বিশ্লেষণ করে একটি জরিপ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো। জরিপে দেখা গেছে, রিভিউয়ের সঠিক ব্যবহারে বেশ এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে তারা। আর শীর্ষস্থান দখল করেছে পাকিস্তান।

ক্রিকইনফোর এই জরিপ অবশ্য কেবল টেস্ট ক্রিকেটের পরিসংখ্যান নিয়ে। তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে টেস্টে রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশের সফলতার হার ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ টাইগারদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে আম্পায়ারদের। আর আম্পায়ার্স কলের কারণে ৪৪.৩ শতাংশ রিভিউ টিকে গেছে (রিটেইন) তাদের। সাদা পোশাকে রিভিউ ব্যবহারে সবচেয়ে সফল দেশ অবশ্য পাকিস্তান। তবে টাইগারদের সঙ্গে তাদের ব্যবধানটা খুব বেশি নয়। পাকিস্তানের সফলতার হার ৩৪.৬ শতাংশ। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে ইংল্যান্ড (৩২.৪ শতাংশ) ও উইন্ডিজ (৩০.৩ শতাংশ)।

এই তালিকায় বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া রয়েছে বেশ পিছিয়ে। তাদের সফলতার হার মাত্র ২৬.৬ শতাংশ। আছে তালিকার সপ্তম স্থানে। ২৭ শতাংশ সফলতার হার নিয়ে তাদের ঠিক উপরে আরেক শক্তিধর দল ভারত। নিউজিল্যান্ডের সফলতার হার ২৮.৪ শতাংশ। ২৫.৪ শতাংশ রিভিউ সফল হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। সবচেয়ে বাজে অবস্থা শ্রীলঙ্কার। তাদের সফলতার হার কেবল ২৩.৩ শতাংশ।

তবে ফিল্ডিং করার সময় সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থা বাংলাদেশের। নয় দলের তালিকায় সবার নিচে তারা। অর্থাৎ, রিভিউ নেওয়ায় দক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হন টাইগার অধিনায়ক। এ সময়ে সফলতার হার মাত্র ১৫.৬ শতাংশ। আর সার্বিক পরিসংখ্যানের মতো ফিল্ডিংয়েও সবচেয়ে ভালো অবস্থান পাকিস্তানের। রিভিউ নিয়ে ৩২.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে তারা।

এতে পরিষ্কার হয়ে ওঠে, রিভিউ নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি ভালো সিদ্ধান্ত নেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। আর প্রথম সারির ছয় ব্যাটসম্যানের সিদ্ধান্ত আরও বেশি সঠিক। তাদের সফলতার হার ৪৫.৮ শতাংশ। বাংলাদেশের চেয়ে সফল অবশ্য ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। তাদের সফলতার হার ৪৮ শতাংশ। এক্ষেত্রে, পাকিস্তানের সফলতার হার ৪১.৪ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার ৩৫.১ শতাংশ। সবচেয়ে বাজে অবস্থা ভারতের। তাদের সেরা ছয় ব্যাটসম্যানের সফলতার হার মাত্র ২৯.৮ শতাংশ।

সুযোগ পেয়েও সবচেয়ে কম রিভিউ নেয় নিউজিল্যান্ড। ৪৭.৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রে রিভিউ নিয়ে থাকে তারা। ৫০ শতাংশের নিচে আছে আর মাত্র একটি দল- বাংলাদেশ। ৪৭.৫৬ ক্ষেত্রে রিভিউ নেয় টাইগাররা। ডিআরএসের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে শ্রীলঙ্কা। ৫৯.৩ শতাংশ ক্ষেত্রে রিভিউ নেয় দলটি।

রিভিউ নিয়ে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট। মোট ১০ বার সফল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে গড়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা হাশিম আমলা। ৮৩.৩ শতাংশ ক্ষেত্রে তিনি সফল হয়েছেন।

উল্লেখ্য, নিয়ম বদলের পর ১ হাজার ১৪১ বার রিভিউ নেওয়া হয়েছে। ৩২৫টি রিভিউ সফল হয়েছে অর্থাৎ আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়েছে। গড়ে প্রতি ৩.৫টি রিভিউতে একটি সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়েছে।

ফিল্ডিংয়ের সময় অধিনায়কদের নেওয়া সিদ্ধান্তের চেয়ে ব্যাটসম্যানদের রিভিউ সফল হয়েছে বেশি। ব্যাটসম্যানদের প্রতি ২.৮টি আবেদনে একটি সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়েছে। সফলতার হার ৫৭ শতাংশ। আর ফিল্ডিংরত অধিনায়কদের নেওয়া রিভিউয়ে সফলতার হার ৩৬.৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ৪.৫টি আবেদনে একটি সিদ্ধান্তে বদল এসেছে।

Comments

The Daily Star  | English
Asaduzzaman Mia, wife concealed assets in tax returns

Mia, wife concealed assets in tax returns

When Asaduzzaman Mia retired as the longest-serving Dhaka Metropolitan Police commissioner in 2019, by his own admission, he went home with about Tk 1.75 crore in service benefits. But that does not give a true picture of his wealth accumulation. Fact is, the career cop and his family became muc

3h ago