করোনাভাইরাস: বস্তিবাসীর ঘরে খাবার নেই, বাইরে কাজ নেই

সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর শ্রমজীবী মানুষের একটি অংশ শহর ছেড়ে গ্রামে গেছে। কিন্তু, রাজধানীর বস্তিবাসীদের অনেকেরই নিজের বলতে ঘর-বাড়ি নেই। তাই তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গাও নেই; কর্মহীন অবস্থায় তারা বস্তিতেই আছেন। ভাইরাসের আতঙ্ক থাকলেও তাদের কাছে করোনা প্রতিরোধের চেয়ে বেশি প্রয়োজন খাবারের নিশ্চয়তা।
রাজধানীর ভাসানটেক বস্তিতে কর্মহীন একটি পরিবার। ছবি: স্টার

সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর শ্রমজীবী মানুষের একটি অংশ শহর ছেড়ে গ্রামে গেছে। কিন্তু, রাজধানীর বস্তিবাসীদের অনেকেরই নিজের বলতে ঘর-বাড়ি নেই। তাই তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গাও নেই; কর্মহীন অবস্থায় তারা বস্তিতেই আছেন। ভাইরাসের আতঙ্ক থাকলেও তাদের কাছে করোনা প্রতিরোধের চেয়ে বেশি প্রয়োজন খাবারের নিশ্চয়তা।

ভাষানটেক দুই নম্বর বস্তির বাসিন্দা আনারকলি। তার স্বামী আবুল কাশেম হিউম্যান হলার চালক। তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার। পুরো পরিবার বাস করে আনুমানিক ৮০ বর্গফুটের একটি বেড়ার ঘরে।

আজ রোববার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, আনারকলির ঘরের ভিতরে কয়েকজন জটলা করে বসে আছে। বসে থাকতে দেখে জানতে চাইলাম, আপনাদের করোনাভাইরাসের ভয় নেই?

তাদের তাৎক্ষণিক উত্তর—ভয় তো আছেই, কিন্তু ঘরে তো আর জায়গা নেই, কোথায় যাব। ঘরে খাবার নেই, বাইরেও কাজ নেই। করোনা ভয় থাকলেও তাই কিছুই করার নেই।

আনারকলি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বস্তিতে যারা থাকে তাদের অনেকের গ্রামে বাড়ি-ঘর আছে। তারা গ্রামে চলে গেছে। আমরা তো গরিব। আমাদের ঘর-বাড়ি কিছুই নেই। তাই বস্তিতেই পড়ে আছি।

ভাষানটেকের এই বস্তিটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন। এখানের বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, আজ কিছু ক্রাণ এসেছিল। নির্দিষ্ট কিছু লোক সেগুলো পেয়েছে।

এখন বেশিরভাগ বস্তিবাসী অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে বলে জানান তারা।

রাজধানীর সবচেয়ে বড় ও ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি কড়াইল বস্তি। করোনা আতঙ্কে এই বস্তির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছে। আর যারা আছে তারা কর্মহীন। ঘরে বসে তাদের অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

কড়াইলের ১ নম্বর ইউনিটের উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুস সোবাহান জানান, কিছু এনজিও ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনা সেটা অপর্যাপ্ত।

তিনি বলেন, বস্তির ঘরগুলো অনেক ছোট ছোট। এখানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। বস্তির মানুষের কাছে ভাইরাস প্রতিরোধের চেয়ে খাবার বেশি দরকারি।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান জানান, তার নির্বাচনী এলাকার বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে কড়াইল বস্তি। এখানে প্রায় ৩০ হাজার পরিবারের বসবাস। পুরো বস্তিটি ৯০ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে। এখানে সীমিত আকারে ত্রাণ সহায়তা শুরু হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Onion price  Tk204 per kg | Onion prices surge in Dhaka after India’s export ban extension

Onion prices surge in Dhaka after India’s export ban extension

Retailers were selling the homegrown variety of onion at Tk 204 a kg at Karwan Bazar today, compared with Tk 130 on Thursday

1h ago