উপসর্গ ছাড়াও হয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ: ব্লুমবার্গ
যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেন ও জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আট লাখ এবং মারা গেছেন প্রায় ৩৯ হাজার। নতুন এ ভাইরাস নিয়ে এখনো কোনো উপসংহারে পৌঁছাতে পারেননি গবেষক বা বিজ্ঞানীরা। বিশ্বব্যাপী করোনা নিয়ে এখনও চলছে গবেষণা।
গবেষকদের মতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসে কি না এবং কতদিন এভাবে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, সে ব্যাপারে ধারণা পেতে হলে আগে জানতে হবে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত কতজনের মধ্যে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে বা কতজনের মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। মৃদু উপসর্গ দেখা দেওয়া বা উপসর্গহীন সংক্রমিতর সংখ্যা জানা গেলে তা সহায়ক হবে গবেষণার কাজে।
ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেফরে শামান চীনে সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়ে তথ্য একত্রিত করেছেন। তার পাওয়া সমীক্ষা অনুযায়ী চীনে মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীন সংক্রমিতদের মাধ্যমেই এই মহামারী ছড়িয়ে থাকতে পারে। প্রকোপ শুরু হওয়ার আগেই ৮৬ শতাংশ মানুষের মধ্যে মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীন সংক্রমিতরা এই ভাইরাস ছড়িয়েছেন বলে তার ধারণা। তার গবেষণাপত্রে সতর্ক করা হয়েছে এমন ‘নিরব সংক্রামক’দের ব্যাপারে ।
আইসল্যান্ডে ব্যাপকহারে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। উপসর্গ থাক বা না থাক, পরীক্ষা করা হয়েছে সবারই। ফলাফল, ৫০ শতাংশ মানুষ করোনায় সংক্রমিত, কিন্তু কোনো উপসর্গ নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃদু উপসর্গ যাদের আছে তারা সাধারণত এগুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন হন না এবং স্বাভাবিক চলাফেরার মাধ্যমে অন্যদের সংক্রমিত করে থাকেন।
গবেষণাকালে অধ্যাপক শামান দেখতে পান এমন অনেক সংক্রমিত রয়েছেন যাদের কোনো উপসর্গ নেই। আবার, এমনও পেয়েছেন যাদের সব উপসর্গ আছে কিন্তু সংক্রমণ নেই।
অধ্যাপক শামান বলেন, ‘সত্যি বলতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার আগে আমরা ঠাণ্ডা বা ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ নিয়ে নিজেদের কর্মস্থল, রেস্টুরেন্ট বা এমন সব জায়গায় যাই যেখানে জনসমাগম আছে। এই কারণেই এই সংক্রমণটি এত দ্রুত ছড়াতে পারছে।’
তিনি আরও জানান, কেউ সংক্রমিত হলে তার শরীরে লক্ষণ দেখা দিতে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এই সময়ের মধ্যে সে অনেক মানুষকে সংক্রমিত করে ফেলার সম্ভাবনা আছে।
অধ্যাপক শামানের মতে, শুধু সংক্রমিতদের ঘরে রাখলে চলবে না। এক অর্থে সবাই সংক্রমিত। তাই সবাইকে ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে হবে।
যেসব দেশ কোভিড-১৯ এর প্রকোপ থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পাচ্ছে তারা প্রচুর পরীক্ষা করছে এবং সংক্রমিতদের সংস্পর্শে কারা এসেছে তাদের খুঁজে বের করছে। সংক্রমিতদের সংস্পর্শে আসা উপসর্গহীন করোনা সংক্রমিতকেও তারা কোয়ারেন্টিনে রাখছে। এতে করে কমছে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।
Comments