মদিনায় করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে মারা গেলেন যশোরের ডা. আফাক হোসেন
সৌদি আরবের মদিনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন যশোরের কৃতি সন্তান ডাক্তার আফাক হোসেন মোল্লা (৫৫)।
তিনি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের আমজাদ হোসেন মাস্টারের ছেলে ও যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদের বড় জামাই।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে সৌদি আরবের মদিনার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে সৌদি আরবে করোনা মোকাবেলায় তিনি রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন বলে জানা গেছে পারিবারিক সূত্রে।
পরিবার জানায়, রোববার তিনি হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। পরে তাকে করোনা স্পেশালিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ পাওয়া যায়।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বর্তমানে তার স্ত্রী জেসমিন জাহান শিরিনকে সৌদি আরবে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
ডাক্তার আফাক হোসেন ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের মেধাবী ছাত্র ছিলেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী হয়ে এমবিবিএস পাস করেন তিনি।
পরে চিকিৎসা সেবাই অর্থপেডিক্স বিভাগে বিশেষ প্রশিক্ষণে তিনি দীর্ঘদিন ইরানে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন।
যশোর এসে রেলরোডে বুশরা অর্থপেডিক্স ক্লিনিক নামের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। তিনি ২০০০ সালে স্বপরিবারে সৌদিতে চলে যান।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মদিনায় সাফা আল-মদিনা ক্লিনিকে অর্থপেডিক্স বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি স্বস্ত্রীক মদিনার একটি ফ্লাটে বসবাস করতেন। তিনি অসংখ্য করোনা রোগীকে সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
অবশেষে তিনি নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। তার বড় মেয়ে বুশরা তাসনিম ঢাকায় স্বামীর সঙ্গে থাকেন। ছোট মেয়ে আফরা নাওয়ার আমেরিকায় পড়াশোনা করেন। একমাত্র ছেলে সামিউল সোয়াদ কানাডার ব্রাম্পটন ফ্লাইট সেন্টারের কমার্শিয়াল পাইলট কোর্সের শিক্ষার্থী।
এছাড়াও, ডা. আফাক হোসেন মোল্লা যখন বাংলাদেশে অবস্থান করতেন তখন তিনি বিনা পারিশ্রমিকে রয়্যাল মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতেন।
মেয়ে বুশরা তাসনিম জানান, আজ বুধবার মরহুমের জানাজা নামাজ শেষে ওহুদ পাহাড়ে দাফন করা হবে।
Comments