ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন: চাপ কমাবেন যেভাবে
করোনাভাইরাসের বিস্তার বন্ধ করতে সারাদেশে অফিস-আদালত, কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু মানুষ কাজ করছেন ঘরে বসেই।
সারাদিন ঘরে থাকাটা ক্লান্তিকর, বিরক্তিকর ও মানসিক চাপের হতে পারে। যা কিনা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
করোনাভাইরাস মহামারি মানুষের প্রতিদিনের রুটিনে পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এমন সময় মানুষের উদ্বিগ্ন থাকা স্বাভাবিক।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। যা বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডা. তেদরোস আধানোম গেব্রোয়াসুস এই বন্ধের সময় নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সংকটের সময় চাপ, বিভ্রান্তি ও ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। আপনার পরিচিত ও বিশ্বস্তদের সঙ্গে কথা বলা এজন্য সহায়ক হতে পারে। আপনার আশেপাশের মানুষদের সাহায্য করতে পারেন। এটা তাদের পাশাপাশি আপনাকেও সহায়তা করবে।’
দেশের বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী ফরিদা আক্তার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উদ্বেগ ও চাপের কারণে হার্টবিট, শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।’
বাবা-মায়ের কাছে থেকে এই উদ্বেগ সন্তানদের মাঝেও প্রভাব তৈরি করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সৃজনশীল কাজের সঙ্গে জড়িত থাকা চাপ নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায় হতে পারে। পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে রান্না করতে পারেন এবং খাবার টেবিলে এ নিয়ে গল্প করতে পারেন। যাদের পড়ার অভ্যাস আছে তারা বই পড়তে পারেন। গানও শুনতে পারে। চাপ কাটিয়ে উঠতে গান-থেরাপি খুব ভালো।’
সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং সেন্টার ইনার ফোর্সের প্রধান নির্বাহী ফরিদা আক্তার আরও বলেন, ‘মানুষ ঘরে বসে ধর্মীয় প্রার্থনায় ব্যস্ত থাকতে পারে। এতে মানসিক প্রশান্তি আসে। সন্তান ও সঙ্গীর সঙ্গে পর্যাপ্ত ভালো সময় কাটানোর এটা একটা ভালো সুযোগ। ব্যস্ত জীবনে আমরা তাদের জন্য সময় খুব কমই পাই। তাদের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে এই সময়টা আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি।’
চাপ কমানোর জন্য তিনি বলেন, ‘অটোসাজেশন, মেডিটেশন, রিলাক্সেশন ও ভিজুয়ালাইজেশন চাপ নিয়ন্ত্রণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। অটোসাজেশন হিসেবে কেউ নিজেকে এই পরামর্শ দিতে পারেন যে, সবাই একই সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মেডিটেশনের মাধ্যমে উদ্বেগ ও চাপ কমাতে দীর্ঘশ্বাস নিতে ও ছাড়তে পারেন।’
কেউ যখন উদ্বেগ ও চাপে থাকে, তখন অনেক সময় তাদের চিন্তা-চেতনা সঠিকভাবে কাজ করে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সংকটকালীন সময়ে চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
Comments