প্রবাসের চিঠি

করোনাক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ায় প্রতারকচক্র

Sydney opera
সিডনি অপেরা হাউজ। ছবি: আকিদুল ইসলাম

অস্ট্রেলিয়ার বড় শহরগুলো এখন কার্যত লকডাউন। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ঘোষণা করেছেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে দেখা গেলে ১১ হাজার ডলার (৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা) জরিমানা অথবা ছয় মাসের জেল দেওয়া হবে।

জরুরি প্রয়োজন হলেও কেউ একা অথবা নিজের পরিবারের কারো ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে বাইরে যেতে পারবেন না। এই ঘোষণার পর অস্ট্রেলিয়ায় পুলিশের টহল বেড়েছে। কড়াকড়ি বেড়েছে। এ দেশের মানুষ যেহেতু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং করোনাভাইরাসের কারণে ঘরে বসেই পাচ্ছেন সরকারের দেওয়া বিশেষ অনুদান সে কারণে অধিকাংশ মানুষ স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি।

প্রধানমন্ত্রী জনগোষ্ঠীকে ছয় মাসের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন। এখানকার মানুষ আশঙ্কা করছেন, যে কোনো মুহূর্তে শপিং সেন্টারগুলো বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে। ফলে অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সংকট দেখা দেবে। খুব সঙ্গত কারণেই অস্ট্রেলিয়ানরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করতে শুরু করেছেন। অধিকাংশ শপিং সেন্টারের সেলফগুলো এখন শূন্য।

এই সুযোগে একটি সুসংগঠিত প্রতারকচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে অস্ট্রেলিয়ায়। অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে যেহেতু নিউ সাউথ ওয়েলসে জনসংখ্যা বেশি তাই এই চক্রটি এই রাজ্যে তাদের প্রতারণার জাল বিছিয়েছে সব থেকে আগে। নিউ সাউথ ওয়েলসের পুলিশের ডেপুটি কমিশনার গ্যারি ওরবয় এই প্রতারকচক্র থেকে সাবধান থাকার জন্য নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তার দেওয়া মিডিয়া ব্রিফিং থেকে জানা গেল, ওই প্রতারকরা অনলাইনের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অর্ডার নিয়ে এক শ্রেণির মানুষকে প্রতারণা করছে। তারা বলছে, তাদের কাছে অর্ডার দিলে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি তারা ঘরে পৌঁছে দেবে। এদের টার্গেট মূলত বৃদ্ধ ও মাইগ্রান্ট জনগোষ্ঠী। গোটা পৃথিবীতে যেহেতু ৬০ ঊর্ধ্ব মানুষ করোনায় বেশি আক্রান্ত তাই এই বয়সের মানুষ অনেক আগেই হোম কোয়ারান্টাইনে গিয়েছেন। তারা অতি প্রয়োজনেও ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না। অন্যদিকে, মাইগ্রান্ট জনগোষ্ঠী সরকারের সব বিধি নিষেধ, আইন, পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। তারা সব সময় পুলিশী ঝামেলা এড়িয়ে চলেন।

পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের ভাষ্য মতে, ওই প্রতারকচক্রটি বৃদ্ধ ও মাইগ্রান্টদের সম্পর্কে সব তথ্য সংগ্রহ করে মাঠে নেমেছে। এরা কেবলমাত্র অনলাইনের মাধ্যমেই নয় চক্রটি প্রচুর মানুষের বাসায় গিয়েও কম মূল্যে দ্রব্য ডেলিভারির কথা বলে অর্ডার নিয়েছে। এরা ইতিমধ্যেই অনলাইনে অনেকের ক্রেডিট কার্ড থেকে ডলার তুলে নিয়েছে এবং বাসায় গিয়ে ক্যাশ ডলারও সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি পুলিশের নজরে আসবার আগেই নাকি তারা কয়েক মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশ বলছে, এই প্রতারক গোষ্ঠী কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়াতেই নয়, বিভিন্ন দেশে তাদের প্রতারণার জাল বিছিয়েছে।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

 

আরও পড়ুন:

পৃথিবীর গভীর অসুখ: আমরাও ভালো নেই অস্ট্রেলিয়ায়

Comments

The Daily Star  | English

Muslim pilgrims pray at Mount Arafat in hajj apex

Thousands of pilgrims began to gather before dawn around the hill and the surrounding plain

2h ago