ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খাবার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে দুস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের সহযোগিতায় সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্বের সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের পুরান বাজার এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী সুমন খান। সেখানেও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা যায়।
শহরের বস্তিবাসী সাহেরা বেওয়া বলেন, ‘ঘরে খাবার নেই, কেনার সামর্থ্যও নেই। অন্যের দেওয়া ত্রাণ সহায়তার দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। পেটে ক্ষুধা থাকলে কোনো নিয়মই কাজ করে না। নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হয়-চলতে হয়, এটা জানি। কিন্তু এত মানুষের ভিড়ে মানা সম্ভব নয়। এই নিয়ম মানতে গেলে আমি ত্রাণ পাবো না।’
ভ্যানচালক নূর ইসলাম বলেন, ‘ত্রাণ সহায়তা, খাদ্য সামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হোক তাহলে আমরা বাড়ির বাইরে যাব না।’
সুমন খান বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ সহায়তা দিতে চেয়েছিলাম, এত মানুষের ভিড় সামলানো যায়নি। দাগ টানা হয়েছে, হ্যান্ড মাইকে বারবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যেন কেউ ভিড় না জমান। এভাবে আর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করবো না। তালিকা করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবো।’
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা ও অবস্থান করাই করোনা থেকে মুক্তির পথ। এভাবে ত্রাণ বিতরণ চললে আমাদের চরম মূল্য দিতে হতে পারে।’
জেলা পুলিশ সুপার আকিদা সুলতানা বলেন, ‘জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের আগে পুলিশকে অবহিত করতে হবে। পুলিশ শৃঙ্খলা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।’
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য বারবার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। আমরা বিত্তশালীদের ত্রাণ সহায়তা দিতে উৎসাহিত করছি, তবে সেটা হতে হবে নিয়ম মাফিক। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম মনিটরিং করা হবে।’
Comments