বাংলাদেশে প্রতি লাখ মানুষের জন্য আইসিইউ বেড ০.৭টি

Masum Molla

দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে সেই সঙ্গে বাড়ছে শঙ্কা। সরকার তার সেবার পরিধি বাড়াচ্ছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ঢাকার বাইরে আইসিইউ বেড স্থাপন করা হয়েছে।

কিন্তু তারপরেও বাংলাদেশে জনসংখ্যার অনুপাতে আইসিইউ বেডের সংখ্যা প্রতিবেশী দেশ ভারত কিংবা পাকিস্তান, এমনকি নেপালের চেয়েও অনেক কম।

কিছু দিন আগে দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতির ব্যাপারে জানাতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বিদেশ থেকে এরই মধ্যে আড়াই শ ভেন্টিলেটর মেশিন দেশে এসেছে। আরও সাড়ে তিন শ ভেন্টিলেটর আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। অনেক বড় বড় দেশেও এতোগুলো ভেন্টিলেটর থাকে না।

এ বছরের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে দেখা যায়, জনসংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশের আইসিইউ বেডের সংখ্যা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা বা মিয়ানমারের চেয়ে কম।

বাংলাদেশে প্রতি এক লাখ লোকের জন্য রয়েছে শূন্য দশমিক সাতটি বেড, যেখানে ভারতে এই সংখ্যা দুই দশমিক তিন। আর উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে হতাশা শুধুই বাড়বে।

সারা দেশের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সুবিধা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল থাকার কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা প্রবীণদের চিকিৎসা ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালে ৫০৮টি আইসিইউ বেড ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭৩৭টি আইসিইউ বেড আছে। নানান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকার আইসিইউ বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায়। কারণ করোনা আক্রান্ত রোগীদের যদি শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে রোগীর ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়। গতকাল পর্যন্ত ঢাকার বাইরে সিলেট, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে পাঁচটি করে মোট ১৫টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আমিনুল হাসান জানিয়েছেন, ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে ৩৪টি বেড বসানো হয়েছে। তার মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ২৬টি ও আটটি শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতালে।

তিনি বলেন. সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে পাঁচটি, রিজেন্ট হাসপাতালের ছয়টি আইসিইউ বেড আছে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য। আমরা এই সপ্তাহের মধ্যে আরও ৮৪টি আইসিইউ বেড দেশের সব বিভাগীয় হাসপাতালে বসাবো।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি অন্য দেশের কথা বলতে পারবো না। যেটা আমি বলতে পারি, সেটা হলো আমরা এক হাজার আইসিইউ বেড বসানোর কাজ করছি।’

কিন্তু কবে বসানো হবে তা নিশ্চিত করে বলেননি তিনি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখ। তাদের মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ফলে, প্রবীণদের নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া পাঁচ জনেরই বয়স ৬০ থেকে ৭৫ এর মধ্যে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য আলাদা আইসিইউয়ের ব্যবস্থা করা উচিত। কারণ, এই রোগে আক্রান্তদের হাসপাতালের অন্য রোগীদের সঙ্গে রাখা যায় না।

Comments

The Daily Star  | English

Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

55m ago