অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে সাভারে ১০০ পোশাক কারখানা চালু

সাভারে কর্মস্থলের উদ্দেশে যাচ্ছেন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

করোনা সংক্রমণ রোধ ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে পোশাক কারখানাগুলো আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য বিজিএমইএর অনুরোধ আমলে না নিয়ে সাভার ও আশুলিয়ায় অনেক কারখানা চালু রয়েছে।

কারখানা বন্ধ-নাকি খুলছে এই নিয়ে গতকাল দিনভর বিভ্রান্তির পর রাতে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক কারখানা বন্ধ রাখার জন্য মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। দিনের মধ্যে এই ঘোষণা না আসায় ততক্ষণে হাজার হাজার শ্রমিক ঢাকায় চলে আসেন। এর মধ্যে গণপরিবহন না পায়ে অনেকেই চাকরি বাঁচানোর জন্য পায়ে আশপাশের জেলাগুলো থেকে হেঁটে ঢাকায় এসেছেন।

এদিকে আজ রোববার সকালে সাভারের বেশ কয়েকটি শিল্পাঞ্চল পরিদর্শন করে সামাজিক দূরত্ব না মেনে গায়ে গা লাগিয়ে দলে দলে শ্রমিকদের কারখানায় প্রবেশ করতে দেখা যায়। শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী সাভার ও আশুলিয়ায় মোট ১০০ টি কারখানা চালু রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ কারখানায় আজ থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে।

সূত্র জানায়, আশুলিয়ার পলাশবাড়ীর স্কাইলাইনের নিটিং, জামগড়া এলাকার প্রিমিয়ার ক্যাপ, ইপিজেড এলাকার গোল্ড টেক্স, একটর অ্যাপারেলস, গোলবাল, শান্তা, সাভার কলমা এলাকায় হট ড্রেস গ্রুপ, সাভারে আল মুসলিম, আলনিমা টেক্সটাইল, ডেনি টেক্স, ঢাকা টেক্সটাইল, সাভার টেক্সটাইল, বিরুলিয়া বউবাজার এলাকার এবিসি বাংলা অ্যাপারেলস লিমিটেড, বিরুলিয়ার মাইন্ড ওয়ান নীট কম্পোজিট লিমিটেড, হেমায়েতপুরের এবি অ্যাপারেলস, জামগড়ার এস এন এস অ্যাপারেলস, জামগড়ার নিটওয়্যার লিমিটেড, ছাফা সুয়েটার, এস কে আর এম ও আশুলিয়ার বারইপাড়ার তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেডসহ শতাধিক কারখানা খোলা রয়েছে।

শ্রমিকরা বলছেন, চাকরি বাঁচাতে ও বেতনের জন্য তারা কাজে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন।

কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে উইন্টার ড্রেস লিমিটেড এর প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, বাসায় যেভাবে নিজেরা সুরক্ষিত থাকার চেষ্টা করি সেভাবেই কারখানায় শ্রমিকদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছি৷ বেশির ভাগ ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে গেছে। দু-একটি ক্রয়াদেশ রয়েছে যেগুলোর জরুরি সরবরাহ করতে হবে। তাই কারখানা খোলা রেখেছি। পরবর্তীতে নির্দেশ এলে কারখানা বন্ধ করা হবে।

এ বিষয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা খাইরুল ইসলাম মিন্টু  বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের সব কিছুই বন্ধ রাখা হয়েছে। কারখানা খোলা রেখে মালিকরা সঠিক কাজ করলেন না। বিভিন্ন এলাকায় ভেতরে ভেতরে কিছু পোশাক কারখানা খোলা রয়েছে। শ্রমিকদের মধ্যে একজন সংক্রমিত হলেও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা সবার জন্য কঠিন হবে। এখনো সময় আছে, কারখানাগুলো বন্ধ করে শ্রমিকদের জীবন রক্ষার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

যোগাযোগ করা হলে ডিইপিজেড এর জিএম আব্দুস সোবহান বলেন, ডিইপিজেড এর ১০০টি কারখানার মধ্য ৫০টি চালু রয়েছে। এর মধ্য জরুরি শিপমেন্ট ও শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য অধিকাংশ কারখানা খোলা হয়েছে।

ডিইপিজেড এর ৬০ শতাংশ শ্রমিক যারা অনলাইনে বেতন পায়, তাদের বেতন দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে আব্দুস সোবহান বলেন, বাকি ৪০ শতাংশ শ্রমিক আগামী দুই-এক দিনের মধ্য বেতন পেয়ে যাবে।

ঢাকা শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সানা শামিনুর রহমান বলেন, সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় মোট ১০০ টি কারখানা চালু রয়েছে। আমরা শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিচ্ছি।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus-Rubio

Yunus, Rubio pledge to deepen economic ties

Bangladesh and the United States yesterday pledged to deepen economic ties and reaffirmed commitment to a stable and peaceful Indo-Pacific region. 

2h ago