করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চট্টগ্রামে মশা বাড়ছে
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে মশার উৎপাত বেড়েছে। আর তা এতোই বেড়েছে যে অনেক জায়গায় দিনের বেলাতেও ঘরে থাকা কঠিন পড়ছে নগরবাসীর জন্য।
নগরীর রাহাত্তারপুল এলাকার বাসিন্দা শুভেচ্ছা ঘোষ মুমু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় যখন পড়তে বসি, ঝাঁকে ঝাঁকে মশারা এসে আমাকে ঘিরে ধরে। কীভাবে এত মশা ঘরে ঢুকে তা বুঝতে পারি না। মশার এই উৎপাত শুরু হয়েছে এক মাসেরও উপরে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে।’
নগরীর জামাল খান এলাকার বাসিন্দা রত্না রাহা বলেন, ‘মশা শুধু রাতের বেলা নয়, দিনেও ঘরে টিকতে দিচ্ছে না। এগুলো এত মারাত্মক যে এরোসল, কয়েল কোনোকিছুতেই কাজ হচ্ছে না। ডেঙ্গুর মৌসুমও চলে এসেছে। জানি না কী হবে!’
পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আজীজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘নগরীর নর্দমা ও খালগুলোতে আবর্জনার স্তূপ জমে পানি জমে থাকে। এগুলো মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যদি সিটি কর্পোরেশন সময় মতো নর্দমা ও খাল পরিষ্কার ও মশার ওষুধ ছিটাতো, তাহলে নগরবাসীকে মশার অত্যাচারে কষ্ট পেতে হতো না।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে নগরীর ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ কারণে নর্দমা ও খালেরে পানি আবদ্ধ অবস্থায় আছে। বদ্ধ পানিতে মশা ডিম পাড়ে। তাই চট্টগ্রামে এই মৌসুমে মশার প্রজনন অনেকগুণ বেড়ে যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন ডেঙ্গুর মৌসুম। যদি করোনাভাইরাসের সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবও শুরু হয়, তাহলে ব্যাপক সংকট তৈরি হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামশুদ্দোহা বলেন, ‘মেয়রের নির্দেশে দুটি টিম নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে মশার ওষুধ স্প্রে করছে। আমরা এখন শুধু ওষুধ স্প্রে করছি, ধোঁয়া দিচ্ছি না। এই কারণে অনেকেই মনে করতে পারেন আমরা বোধহয় মশা নিধনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি।’
নগরবাসী কেন মশার অত্যাচারে কষ্ট পাচ্ছে, জানতে চাইলে সামশুদ্দোহা বলেন, ‘মশক নিধনের দায়িত্ব শুধু সিটি কর্পোরেশনের উপর ছেড়ে দিলে হবে না, নগরবাসীকেও কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। সবাইকে নিজেদের আঙিনা ও চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’
Comments