করোনা থেকে বাঁচতে স্ব-উদ্যোগে এলাকাবাসীর লকডাউন

মানিকগঞ্জ থানা রোড। ছবি: স্টার

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে স্ব-উদ্যোগে লকডাউন করেছে এলাকাবাসী। মানিকগঞ্জ পৌরসভার উত্তর সেওতা, ঘিওর উপজেলার জাবরা খানপাড়া, সাটুরিয়া উপজেলার পানাইজুরী গ্রামসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে স্ব-উদ্যোগে লকডাউন করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে, এসব স্থানে লকডাউনের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তাদের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান তারা।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ পৌরসভার উত্তর সেওতা এলাকায় গিয়ে দেখা গেল রাস্তার ওপর বাঁশ ফেলে রাস্তার গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছে তারা। পাঁয়ে হাটা কিংবা মোটর সাইকেল-বাইসাইকেল আরোহীর জন্য রাস্তার একপাশে একটু জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে। সেখান দিয়ে যাতায়াত করার সময় গাড়িতে ও শরীরে দেওয়া হচ্ছে জীবাণুনাশক ওষুধ মিশ্রিত পানি। এলাকার শিক্ষিত যুবকদের স্ব-উদ্যোগে এই কাজটি করতে দেখা গেছে।

মাসুদুর রহমান মাসুদ, মোমিন মোল্লা, সবুজ মিয়া, শফিকুল ইসলাম আসলাম, মো. শহিদ, চুন্নু মিয়া, কাজিম উদ্দিন, অন্তর মোল্লা, সুজন মোল্লা, জীবন মোল্লা, মোশারফ হোসেনসহ অনেকেই শামিল হয়েছেন এই কাজে।

কথা হলো উদ্যোগীদের একজন অন্তর মোল্লার সঙ্গে। এই কলেজ শিক্ষাথী এলাকার বড়ভাইদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে তারা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।

ঘিওর উপজেলার জাবরা খান পাড়ার সড়কটি সম্পূর্ণভাবে বাঁশ বেঁধে আটকে দেওয়া হয়েছে। অনুরূপভাবে লকডাউন ঘোষণা করেছে সাটুরিয়া উপজেলার পানাইজুরী গ্রামকে। বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা লেখা সম্বলিত নানা স্টিকার-ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। গ্রামের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে পাহারা। পর্যায়ক্রমে পাহারা দিচ্ছেন শিক্ষিত যুবকরা।

এদিকে, মানিকগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়ক, গঙ্গাধরপট্টি থানা সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে বাঁশ ও নির্দেশিকা সম্বলিত ব্যরিকেড দিয়ে যানচলাচল আটকে দিয়েছে পুলিশ।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অপ্রয়োজনে মানুষের চলাচল বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেডসহ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ও ওষুধ কেনা ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না।’

অহেতুক কেউ যাতে রাস্তায় না আসে— সে ব্যাপারে মানিকগঞ্জবাসীর সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।   

এলাকাবাসীর এমন সব উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস। তবে, যেকোনো উদ্যোগ গ্রহণ করার পর তা বাস্তাবায়নের আগে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। যা তারা করেননি বলে জানান তিনি।

এছাড়া, ওষুধের দোকান ছাড়া সব ধরণের দোকান বিকাল ৫টার মধ্যে বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এই নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।

উল্লেখ্য, গত কয়েকদিনে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তাবলিগ জামাতের এক সদস্য ও এক নারী স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সমগ্র সিংগাইর পৌর এলাকা ও করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু সন্দেহে ঘিওর উপজেলার একটি গ্রামকে লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

এছাড়াও, সিংগাইরে আক্রান্ত তাবলিগ জামাতের ওই সদস্যের সংস্পর্শে আসা ২৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা থেকে আসা আইইডিসিআর’র প্রতিনিধি দল।

Comments

The Daily Star  | English

A transitional budget for troubled times

Govt signals people-centric priorities but faces tough trade-offs

2h ago