গাজীপুরে পোশাক কারখানায় শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

Gazipur.jpg
গাজীপুরে জোরপূর্বক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে তৈরি পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: স্টার

গাজীপুরে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও পরিচয়পত্র জমা রেখে আংশিক বেতন পরিশোধ করে ছাটাইকালে বিক্ষোভ করেছেন ওই কারখানার শ্রমিকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আজ শুক্রবার নগরীর কড্ডা নাওজোর (চেয়ারম্যান বাড়ি) এলাকার ‘এপিএস হোল্ডিং লিমিটেড’ নামের তৈরি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

কারখানার সুইং শাখার সহকারী উৎপাদন ব্যবস্থাপক (এপিএম) আজিজুর রহমান জানান, কারখানায় প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক ও কর্মী কাজ করেন। তাদের মধ্যে যাদের চাকরির বয়স এক বছর পূর্ণ হয়নি, এমন সাড়ে তিন শতাধিক শ্রমিকের জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ও পরিচয় পত্র জমা রেখে মার্চ মাসের ২৬ দিনের বেতন দিয়ে আজ ছাটাইয়ের চেষ্টা চালায় কর্তৃপক্ষ। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এসময় পুলিশের হস্তক্ষেপে কারখানা কর্তৃপক্ষ কিছু পরিচয়পত্র ফেরত ও কিছু স্বাক্ষর নেওয়া সাদা কাগজ ছিঁড়ে ফেললেও দুইশর মতো শ্রমিক ও কর্মীর পরিচয়পত্র ও স্বাক্ষরযুক্ত সাদা কাগজ ফেরত দেয়নি।

এ ব্যাপারে কারখানার মানব সম্পদ কর্মকর্তা বাহাদুর আলম জানান, আমরা ২৭ মার্চ থেকে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে নোটিশ দিয়েছি। পরে ২৮ মার্চ থেকে নিয়মানুযায়ী শ্রমিক-কর্মীর যতটুকু কর্তন করার কথা, তার চেয়ে অর্ধেক বেতন কর্তন করে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মার্চ মাসের বেতন পরিশোধের কাজ চলছে।

তবে তিনি শ্রমিক ও কর্মীর পরিচয়পত্র নেওয়া ও ছাটাইয়ের কথা অস্বীকার করেছেন।

নোটিশের ব্যাপারে কারখানার শ্রমিকেরা জানায়, লে-অফের ওই নোটিশ বৃহস্পতিবারও ছিল না। শুক্রবার বেতন নিতে গিয়ে কারখানার প্রধান ফটকে ৩০ মার্চের স্বাক্ষরযুক্ত কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান শ্রমিকেরা। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়লে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে যেন শ্রমিক ও কর্মীদের ছাটাই না করা হয়, সেজন্য আমি শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছি এবং তাদের কাছ থেকে নেওয়া পরিচয়পত্র ফেরত দিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া সাদা কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

শ্রমিকেরা তাদের ২৬ দিনের বেতন নিয়ে চলে গেছে বলে জানান তিনি।

অপরদিকে, গাজীপুর সদর উপজেলার মণিপুর এলাকার আরেকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জোরপূর্বক ছাটাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিচয়পত্র জমা না দিলে কোনো শ্রমিককে মার্চের বেতন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকেরা।

‘রোজ ভ্যালী ফ্যাশন লিমিটেড’ নামের ওই কারখানার শ্রমিকেরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে কারখানাটি ২৫ মার্চ ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে কারখানার সুপারভাইজার ও শিফট ইনচার্জের মাধ্যমে গত বুধবার শ্রমিকদের ফোন করে কারখানায় গিয়ে মার্চ মাসের বেতন তোলার কথা বলা হয়। কারখানায় গেলে কম্পিউটার কম্পোজ করা পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়।

স্বাক্ষর করা ছাড়া ও পরিচয়পত্র ফেরত দেওয়া ছাড়া কাউকে মার্চের বেতন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।

শ্রমিকেরা আরও জানান, এ নিয়মে আজ পর্যন্ত কমপক্ষে দেড়শ শ্রমিককে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এতে মাস শেষে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার পথ অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Protests continue as Ishraque vows to stay on streets until advisers resign

Protests rolled into this morning as BNP activists and leaders held their ground in front of the mosque, demanding that Ishraque be allowed to take the oath as mayor.

40m ago