করোনাভাইরাস

লাখ ছাড়াল মৃতের সংখ্যা

Coronavirus-1.jpg
ছবি: জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি ওয়েবসাইট

করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। গত ১১ জানুয়ারিতে করোনায় প্রথম মৃত্যুর তিন মাসের মধ্যে এ সংখ্যা লাখ ছাড়াল।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ লাখ ৫০ হাজার ২১০ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৩৭৬ জন। চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৬৬৯ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। এক দিনে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্ত দেশগুলোর হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা জানা গেলেও, এর বাইরেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও অনেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তাই, প্রকৃত আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা জানা কঠিন।

পরিসংখ্যান বলছে, করোনায় মৃতদের অধিকাংশই হৃদরোগ কিংবা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের মডেল অনুযায়ী, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের গতি একইরকম থাকলে আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে কেবল যুক্তরাজ্যেই প্রায় ৫ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করবে।

করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭৪৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ১৭ হাজার ৯২৫ জন।

গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সর্বোচ্চ দুই লাখ মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের সদস্য ডা. ফউসি।

শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব ও কঠোর নির্দেশনার মেনে চলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে। সর্বোচ্চ ৬০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে।’

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষণা বলছে, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে উপসর্গ দেখা দিলে সেলফ আইসোলেশনে যাওয়ার যে নির্দেশনা দিয়েছিল, তাতে ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারতো। তবে লকডাউন ও অন্যান্য নির্দেশনার কারণে মৃতের হার কমানো যাবে। লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে চললেও যুক্তরাজ্যে অন্তত ২০ হাজার মানুষ করোনায় মারা যেতে পারেন।

এদিকে, করোনা মহামারিতে ইউরোপের সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১৫ হাজার ৯৭০ জন।

এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইউরোপের দেশ ইতালিতে। দেশটিতে মারা গেছেন ১৮ হাজার ৮৪৯ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৭।

বিবিসি সায়েন্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একবিংশ শতাব্দীতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মহামারি কোভিড-১৯।

৬ষ্ঠ শতাব্দীতে জাস্টিনিয়ান প্লেগ মহামারিতে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। প্রায় ৫ কোটি মানুষ সেসময় মৃত্যুবরণ করেন।

১৪শ শতাব্দীর ব্ল্যাক ডেথ মহামারির সময়ে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল অন্তত ২০ কোটি মানুষ। ২০ শতাব্দীতে গুটিবসন্ত মহামারিতে মারা যায় ৩০ কোটি মানুষ। ১৯১৮ সালের ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা গেছেন প্রায় ৫ থেকে ১০ কোটি মানুষ।

১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩০ লাখ মানুষ মারা গেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, আগের দুই করোনাভাইরাস সার্স ও মার্সের তুলনায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের দিক থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

ডব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী, ২০০৩ সালে সার্স (সিভিয়ার অ্যাকুইটি রেসপিরেটরি সিনড্রোম) করোনাভাইরাসে মারা যান ৭৭৪ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮ হাজার ৯৮ জন।

অন্যদিকে, ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আরেক করোনাভাইরাস মার্সে (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪৯৪, মারা গেছেন ৮৫৮ জন।

Comments

The Daily Star  | English
government bank borrowing target

Govt to give special benefits to employees, pensioners from July 1

For self-governing and state-owned institutions, the benefit must be funded from their budgets

1h ago