বিশ্বাসের অট্টালিকা ধসে পড়েছিল যেদিন
হ্যানসি ক্রনিয়েকে মনে পড়ে? নব্বই দশকে অনেকেরই প্রিয় ক্রিকেটার, প্রিয় ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব। নেতৃত্বের মুন্সিয়ানায় দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক বনেছিলেন তিনি। তার সততা নিয়েও ছিল না কোনো প্রশ্ন। কিন্তু বিশ বছর আগে আজকের এই দিনে সব কিছু ধসে মাটিতে যেন মিশে গিয়েছিল। বেরিয়ে এসেছিল তেতো এক সত্য।
২০০০ সালের এপ্রিল মাসের ৭ তারিখ বেরোয় চাঞ্চল্যকর এক খবর। প্রোটিয়া অধিনায়ক ক্রনিয়ে জড়িত ছিলেন ম্যাচ পাতানোতে। প্রকাশিত এই প্রতিবেদন প্রথমে অস্বীকার করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলি বাখেরও পাশে দাঁড়ান ক্রনিয়ের। তিনি বলেন, ক্রনিয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সততা প্রশ্নাতীত। কিন্তু এর মাত্র চারদিন পর ক্রনিয়ে নিজেই স্বীকার করেন তার বিরুদ্ধে আনা কেলেঙ্কারির অভিযোগ।
ফোনালাপে জুয়াড়ি সঞ্জয় চাওলার সঙ্গে ম্যাচ পাতানো নিয়ে আলাপ হয়েছিল বলে জানান ক্রনিয়ে। বেরিয়ে আসে আরও তিন ক্রিকেটার হার্শেল গিবস, নিকি বোয়ে ও পিটার স্টাইড্রমের নাম। স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট থেকে আজীবন নিষিদ্ধ হন তখনকার সফলতম প্রোটিয়া অধিনায়ক।
এই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে পরে আপিল করেছিলেন ক্রনিয়ে। কিন্তু পুরো মামলাটি দেখা যাওয়ার সুযোগ হয়নি তার। ২০০২ সালের ১ জুন এক বিমান দুর্ঘটনায় মাত্র ৩২ বছর বয়সে নিহত হন তিনি। যদিও সেই বিমান দুর্ঘটনা কেন ঘটেছিল, তা এখনও থেকে গেছে রহস্যাবৃত।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে ভারতীয় পুলিশ ক্রনিয়ে ও কয়েকজন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর বিষয়ে চার্জশিট দাখিল করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৬৮ টেস্টে ৩ হাজার ৭১৪ এবং ১৮৮ ওয়ানডেতে ৫ হাজার ৫৬৫ রান করেন ক্রনিয়ে। মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে টেস্টে ৪৩ আর ওয়ানডেতে ১১৪ উইকেট আছে তার। তবে অধিনায়ক হিসেবে তার রেকর্ড অনেক বেশি ঝলমলে। ৫৩ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ২৭ টেস্টে দলকে জিতিয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বে ১৩৮ ওয়ানডে খেলে ৯৯টিতেই জয় পায় প্রোটিয়ারা।
Comments