রাজবাড়ী-ব্রাহ্মণবাড়িয়া লকডাউন

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় রাজবাড়ী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর থেকে রাজবাড়ী জেলা ও সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউনের ঘোষণা দেয় স্থানীয় প্রশাসন।
ম্যাপ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় রাজবাড়ী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর থেকে রাজবাড়ী জেলা ও সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউনের ঘোষণা দেয় স্থানীয় প্রশাসন।

রাজবাড়ী জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ জন শনাক্ত হওয়ায় আজ দুপুর থেকে সদর উপজেলা লকডাউন করেনে স্থানীয় প্রশাসন।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন মো. নুরুল ইসলাম।

রাজবাড়ী সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্তরা সবাই জ্বর, সর্দি নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তারা সবাই হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি চলে যান। এদের মধ্যে ৩০ জনের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল শনিবার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পৌঁছায়। এদের মধ্যে পাঁচ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এদের মধ্যে একজন নারী ও চারজন পুরুষ। আক্রান্তদের বয়স ২০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। 

সিভিল সার্জন মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আক্রান্তরা সবাই জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি নিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। নমুনা সংগ্রহের পর তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছিল। আজ নমুনার ফলাফল পেয়েছি। আক্রান্তদের হাসপাতালের আইসোলেশনে আনার প্রক্রিয়া চলছে।’

রাজবাড়ী সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাঈদুজ্জামান খান বলেন, ‘আক্রান্তরা বাড়িতে ছিলেন। তারা আশপাশের মানুষকেও আক্রান্ত করে থাকতে পারেন। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে সদর উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার সদস্যদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

অন্যদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সাত জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে এক জন মারা গেছেন। বাকি ছয় জনের মধ্যে চার জন নারী ও দুই জন পুরুষ। তারা রাজধানীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রধান করণিক মো. জাহিদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে মোট ৬০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। এর মধ্যে প্রথম রিপোর্ট আসা ১৫ জনের করোনা নেগেটিভ আসে। আজ প্রাপ্ত সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, আখাউড়া উপজেলায় তিন জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় একজন, বিজয়নগর উপজেলায় একজন, বাঞ্ছারামপুরে একজন ও নবীনগরে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে নবীনগরের একজন গতকাল ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

জেলায় সাত জন করোনা রোগী শনাক্ত ও এদের মধ্যে একজন মারা যাওয়ার খবরে আজ দুপুরে জরুরি সভা করেছে জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত সভা শেষে আজ সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পুরো জেলা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, ‘লকডাউন কার্যকরের পর এ জেলা থেকে কেউ বের হতে পারবেন না এবং কেউ প্রবেশও করতে পারবেন না। তবে জরুরি সেবাগুলো চালু থাকবে।’

Comments