পর্যাপ্ত মজুদ আছে, তবুও লালমনিরহাটে কমছে না চালের দাম

লালমনিরহাটে কমছেই না চালের দাম। গত দুদিনে চালের দাম আগের চেয়ে কেজিপ্রতি বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। ক্রেতা কম থাকার পরও দাম বাড়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ।
ত্রাণ দিতে কেনা হচ্ছে চাল। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটে কমছেই না চালের দাম। গত দুদিনে চালের দাম আগের চেয়ে কেজিপ্রতি বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। ক্রেতা কম থাকার পরও দাম বাড়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ।

করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে প্রতি কেজি চাল যেখানে বিক্রি হতো ২৫ থেকে ৩৪ টাকায়, সেখানে দুদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৩৩ থেকে ৪৫ টাকায়। বর্তমানে আবারও দাম বেড়ে হয়েছে ৩৬ থেকে ৫২ টাকা।

লালমনিরহাট শহরের গোশালা বাজারের চাল ব্যবসায়ী জাহেরুল ইসলাম জানান, বাজারে তেমন চালের ক্রেতা নেই। কিন্তু, চালের দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা রাইস মিলের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কিনছি। তাই বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করছি। খুচরা চাল বিক্রি কমলেও পাইকারি বিক্রি বেড়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছ থেকে চাল কিনে ত্রাণ হিসেবে দুস্থদের মাঝে বিতরণ করছে।’

আদিতমারী উপজেলার এক চালকল মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, তার কাছে ধানের স্টক নেই। বাজার থেকে বেশি দামে ধান কিনে চাল প্রস্তুত করতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।

উপজেলার পলাশি গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, কৃষকরা এক মাস আগেই কম দামে তাদের ধান বিক্রি করে ফেলেছে। এখন তাদের কাছে ধান নেই। কিন্তু, ধানের দাম বেড়েছে অনেক। ধানের মহাজন ও চালকল মালিকরা তাদের ধান কিনে গুদামজাত করে রেখেছেন।

লালমনিরহাটের ভোক্তা অধিকার কমিটির সদস্য সাংবাদিক তৌহিদুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে ধান ও চালের প্রচুর মজুদ আছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে পুঁজি করে তারা ধান চালের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এসব অসৎ ব্যবসায়ীরা ভাবছেন, করোনা প্রাদুর্ভাব আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাবে এবং ধান ও চাল থেকে আরও বেশি মুনাফা করবেন।’

জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় সরকারিভাবে ৪৪০ মেট্রিক টন চাল ৪৪ হাজার কর্মহীন দিনমজুর শ্রমিক ও দুস্থ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। অপরদিকে, বেসরকারিভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে প্রায় সমপরিমাণে খাদ্যসামগ্রী আরও ৫০ হাজার পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

বাজারে চালের দাম আরও বেড়েছে স্বীকার করে লালমনিরহাট জেলার কৃষি বাজার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা (মার্কেটিং অফিসার) আব্দুর রহিম বলেন, ‘করোনার কারণে শ্রমিক সংকটে মিল চাতালগুলো চাল উৎপাদন করতে পারছে না। তাই চালের সরবরাহ কমেছে। তবে, ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর পরিমাণে চালের মজুদ রয়েছে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা কাজ করছি।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি হঠাৎ করেই চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর পরিমাণ মজুদ আছে, আমরা জানি। এরপরেও কেন দাম বাড়ছে, এ ব্যাপারে আমরা অভিযান চালাবো।’

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago