খণ্ডকালীন কাজ হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বিপাকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন গত ৩ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, এই মহামারিতে নাগরিকদের ছাড়া আর কারও দায়িত্ব নেবে না তার সরকার। অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন খণ্ডকালীন কাজ হারানো হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থী।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন গত ৩ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, এই মহামারিতে নাগরিকদের ছাড়া আর কারও দায়িত্ব নেবে না তার সরকার। অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন খণ্ডকালীন কাজ হারানো হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থী।

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় মার্চের মাঝামাঝিতে অস্ট্রেলিয়ায় সব হোটেল, রেস্টুরেন্ট, নাইটক্লাব ও ক্যাসিনো বন্ধ করে দেওয়া হয়। মূলত এসব প্রতিষ্ঠানেই বিদেশি শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন কাজ করতেন। এদেশে শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করার অনুমতি ছিল না। পরিবর্তিত অবস্থায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী কাজ হারিয়েছেন। বিদেশি হওয়ায় সরকারি সহায়তাও পাচ্ছেন না। ফলে অনিশ্চিত এক সময়ের মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে।

প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতি সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিতে হয় ১৬-২০ হাজার ডলার। এর বাইরে আছে ঘরভাড়া, খাবার ও অন্যান্য খরচ। বাংলাদেশেও যেহেতু করোনা প্রবলভাবে আঘাত হেনেছে তাই এই দুর্যোগময় সময়ে অনেকেই পরিবার থেকে অর্থ সাহায্য পাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সময় কাটছে হতাশা আর অনিশ্চয়তায়।

২০১৮ সালে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসেন পৃত্থিরাজ মৈত্র। সিডনির একটি পার্কে কাজ করতেন তিনি। এখন কর্মহীন। এই প্রতিবেদককে বলেন, এমন দুঃসময় অস্ট্রেলিয়ান জীবনে আর কখনো আসেনি। দেশে বাব-মা চিন্তায় পড়তে পারে ভেবে তাদেরকেও কিছু জানাতে পারছি না। ফেরার ফ্লাইট না থাকায় দেশেও যাতে পারছি না।

বাংলাদেশি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অবস্থা অনেকটা এরকমই। তাদের অনেকেই বলছেন, সামান্য কিছু জমানো অর্থ আছে। তিন-চার সপ্তাহ পর অবস্থা ভয়াবহ হবে। তখন অনেককেই রাস্তায় নামতে হবে।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বর্তমান অবস্থা এবং দেশে ফেরার ব্যাপারে দূতাবাসের ভূমিকা জানতে চাইলে হাইকমিশনার সুফিউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের এই অবস্থার কথা বাংলাদেশের সরকার অবহিত। আমরা তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, অস্ট্রেলিয়া তাদের নাগরিকদের বিভিন্ন দেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ফিরিয়ে আনছে; বাংলাদেশ সরকার কি আটকে পড়া এসব শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নেবার কোন উদ্যোগ নেবে? হাইকমিশনার বলেন, শিক্ষার্থী, পর্যটকসহ আটকে পড়া সবাইকেই ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে দুই দেশের সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা চলছে।

আকিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago