চা শ্রমিকদের ভুখা মিছিল

কুলাউড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালিটি চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ১২ সপ্তাহ ধরে বকেয়া। এতে ৫৩৬ স্থায়ী শ্রমিক পরিবারসহ হাজার খানিক শ্রমিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বকেয়া মজুরির দাবিতে আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ভুখা মিছিল করেছেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানান, কালিটি চা বাগান ‘কালিটি টি কোম্পানি লিমিটেডের’ নামে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। এই বাগানে মোট ৫৩৬ জন নিয়মিত শ্রমিক কাজ করেন। প্রত্যেক শ্রমিক দৈনিক মজুরি পান ১০২ টাকা। যা প্রতি সপ্তাহে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু গত ১২ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকরা তাদের মজুরি পাচ্ছেন না।
বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সম্পাদক উত্তম কালোয়ার জানান, শ্রমিকরা এমনিতেই সামান্য মজুরি পান। যদি ১২ সপ্তাহ ধরে কেউ সেই মজুরিটুকুও না পায়, তাহলে কি অবস্থা হতে পারে? ঘরে চাল-ডাল নেই। উপোষ দিন কাটাতে হচ্ছে সবার। বাগান কর্তৃপক্ষ আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করছে।’
বাগান পঞ্চায়েতের এডহক কমিটির সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ দাশ অভিযোগ করেন, বাগানে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যা চলছে। শ্রমিকদের আগের মজুরিরও বেশ কিছু টাকা বকেয়া পড়ে আছে। বেশিরভাগ শ্রমিক জরাজীর্ণ কাঁচা ঘরে বসবাস করেন। এসব ঘর মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অবসরে যাওয়া শ্রমিকরা তহবিলের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ মজুরি থেকে সাত শতাংশ করে ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকা কেটে রাখা হয়।
বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শম্ভু চৌধুরী দাশ বলেন, ‘এর সঙ্গে মালিকপক্ষ আরও সাত শতাংশ যোগ করে মোট ১৫ শতাংশ টাকা শ্রম অধিদপ্তরে জমা দেওয়ার কথা। বাগান কর্তৃপক্ষ সেটাও করছে না। বাগানে চিকিৎসক নেই। এসব সমস্যার প্রতিকারের জন্য শ্রমিকরা শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন। কিন্তু ১২ সপ্তাহ যাবত কোন সুরাহা হয়নি। আমরা কোনো উপায় না পেয়ে আজ ভুখা মিছিল করছি।’
কালিটি বাগানের ব্যবস্থাপক প্রণব কান্তি দেব জানান, কোম্পানির কাছ থেকে যথাসময়ে টাকা না পাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। মালিক পক্ষ জানিয়েছে, একসঙ্গে পাঁচ সপ্তাহের মজুরিসহ সমস্যারও পর্যায়ক্রমে সমাধান হবে। তিনিসহ বাগানের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১১ মাসের বেতন বন্ধ আছে।
Comments