ডাক্তার-নার্সদের করোনা পরীক্ষায় বিলম্বের অভিযোগ
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতির কোভিড-১৯ শনাক্ত হয় গত রোববার রাতে।
এ ঘটনায় হাসপাতালের ৪৪ ডাক্তার-নার্স-স্টাফকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ২২ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়।
যদিও পরীক্ষায় কারো কোভিড-১৯ ধরা পড়েনি, তবুও গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের ফেসবুক পোস্টে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন আচরণ ও ডাক্তার-নার্সদের করোনা পরীক্ষা করতে গড়িমসির অভিযোগ ওঠে।
বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নাসরীন আখতার মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক পোস্টে করোনা টেস্ট করানো প্রসঙ্গে লিখেন, ‘নিজেদের টেস্ট করানোর জন্য ওরা হাসপাতালে একেকজন ১৬ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে।… ওরা শুধু পরীক্ষাটাই চেয়েছিলো। কোনরকম স্বান্তনা বা সহমর্মিতা না দেখিয়ে চরম অপমানজনক কথা শুনিয়ে টেস্ট করতে অপারগতা দেখায়। পছন্দ না হলে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও বলা হয়।’
এ ব্যাপারে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই নারী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলে যে সব ডাক্তার-নার্সরা ওই নারীকে অপারেট করেছিলো বা চিকিৎসা দিয়েছিলো, তারা আতঙ্কিত হন। সেদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত বারবার অনুরোধ করার পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়নি, বরং চরম খারাপ ব্যবহার করে।’
‘যদিও শেষ পর্যন্ত ফলাফলে প্রথমবার পরীক্ষা করা কারো করোনা ধরা পড়েনি; কিন্তু গড়িমসি, খারাপ ব্যবহারের দায় কে নেবে?’ প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এদিকে ওই নারীর করোনা শনাক্তের পর তাকে দ্রুত শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে ৪৪ জন ডাক্তার-নার্স-স্টাফকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয় বলে জানান হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের ২২ জনের পরীক্ষায় কারো কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়নি। বাকিদেরও নমুনা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে ওই রোগীর মাধ্যমে কেউ করোনাক্রান্ত হয়েছেন কিনা।’
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক নারীর কোভিড-১৯ ধরা পড়ায় সবাই আতঙ্কিত হয়েছিলেন। আমাদের টেকনিশিয়ান স্বল্পতা রয়েছে। মূলত সেটা সারা দেশেই। তাই পরীক্ষার নমুনা নিতে দেরি হয়েছে। কোনো গড়িমসি থেকে নয়। কিন্তু, তারা আতঙ্কিত থাকায় এমন মনে হয়েছে তাদের।’
Comments