করোনা ঝুঁকির মধ্যে শিপইয়ার্ড চালু করল মালিকরা

প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিককে করোনা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়ে আজ থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৬০টি ইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।
স্টার ফাইল ফটো

প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিককে করোনা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়ে আজ থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৬০টি ইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে।

গত ২৪ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর জাহাজ ভাঙার কাজে যুক্ত ৩০ হাজার শ্রমিক বাড়ি চলে গেলেও, প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক যানবাহনের সংকটে বাড়ি ফিরতে না পেরে আটকা পড়ে আছে লেবার ক্যাম্পে। তাদের অভিযোগ, জোর করে কাজে যোগ দিতে তাদের বাধ্য করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীতাকুণ্ড উপজেলার জিরি সুবেদার এলাকার এক শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যানবাহন সংকটে আমরা বাড়ি ফিরতে পারিনি। মানবেতর জীবনযাপন করছি। এমনিতে করোনার ঝুঁকিতে আছি। তার উপর কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘মালিকরা এই খাতের শ্রমিকদের সুরক্ষা সামগ্রী দেন না। করোনা থেকে বাঁচানোর জন্য তারা ব্যবস্থা নিবে এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।’

তবে সরকার বলছে, মালিক আর শ্রমিকরা চেয়েছে বলেই তারা ইয়ার্ড চালু করেছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইয়ার্ড মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিএ) এর বৈঠকের পর চিঠি দিয়ে সংগঠনের সদস্যদের জাহাজ ভাঙার কাজ শুরু করতে বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার থেকে ইয়ার্ড চালু করেন মালিকরা। ওই চিঠির একটা কপি দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে।

বিএসবিএ যে চিঠি ইস্যু করেছে তাতে করোনা থেকে শ্রমিকদের নিরাপদ রাখতে পিপিই, গ্লাভস ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সংগঠনের সদস্যদের বলা হয়েছে। বাস্তবে কতটুকু সেটার প্রয়োগ হবে সেটা নিয়ে সন্দিহান শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো।

জাহাজভাঙা শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা ইপশা-র সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী শাহিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এমনিতে শ্রমিকদের সুরক্ষায় অনেক ঘাটতি আর অবহেলা আছে ইয়ার্ডগুলোতে। এ অবস্থায় করোনার ঝুঁকি থেকে শ্রমিকদের রক্ষায় তারা কতটা পদক্ষেপ নিবে সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে, আমরা আশা করব মালিকরা শ্রমিকদের রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নিবে। শ্রমিকরা না বাঁচলে তো মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

বিএসবিএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ১০ দিন বন্ধ রাখার পর আজ থেকে আবার চালু হয়েছে ৬০টি শিপইয়ার্ড। সরকার তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু সরকার ইয়ার্ড বন্ধের জন্য বলেনি আর শ্রমিকরাও কাজ করতে চায় তাই আমরা ইয়ার্ড চালু করেছি।’

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম সামসুল আরেফিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করতে চাচ্ছে। যদি তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারে, তাহলে আমি কোন সমস্যা দেখছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর আমরা তো তাদের ইয়ার্ড বন্ধ করতে বলিনি, খুলতেও বলিনি। এটা তাদের বিষয়। আমাদের করার কিছু নাই।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago