ল্যাব থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন
চীনের পরীক্ষাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়া এমন অভিযোগের সমালোচনা করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে সাউথ চায়না পোস্ট জানায়, চীন বিশ্বাস করে ভাইরাসের উৎস কেবল বিজ্ঞানীরাই খুঁজে বের করতে পারবেন। এই ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্তব্যের আগে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়াম বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এখনো পর্যন্ত পরীক্ষাগারে ভাইরাসটি তৈরি হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। অনেক বিখ্যাত চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন, ল্যাব থেকে নতুন করোনাভাইরাস তৈরির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘চীন অন্যান্য দেশের সঙ্গে মহামারি মোকাবিলায় লড়াই চালিয়ে যাবে। একে অন্যকে সাহায্য করেই মহামারি ঠেকানো যাবে।’
শুরু থেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য চীনকে দোষারোপ করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনের উহান শহরের পরীক্ষাগার থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে দাবি করেছেন তিনি।
গত বুধবার, হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এই ব্যাপারে আরও অনেক কিছু জানতে পেরেছি। সেসব আমি জানাব। এখন এমন একটি সময়ে আমরা আছি যেখানে মানুষের কথাও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। শোনা কথাও এ সময় কাজে আসতে পারে। ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার, মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জেনারেল মার্ক মাইলি জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রাকৃতিকভাবে ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। তবে, এখনো এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
বুধবার ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উহানের ল্যাবে ভাইরাসটি কোনো জীবাণু অস্ত্র হিসেবে নয় বরং ভাইরাস চিহ্নিত ও মোকাবিলার ক্ষেত্রে চীনের সক্ষমতা প্রমাণের জন্য ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। ভাইরাস মোকাবিলায় চীন যুক্তরাষ্ট্রের সমান কিংবা তার চাইতেও বেশি সক্ষম সেটি প্রমাণের প্রচেষ্টার অংশ হতে পারে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার, ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কর্মকর্তারা ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তারা এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কথা ওয়াশিংটনকে জানিয়েছিলেন। তারা সেসময় বাদুড় থেকে সংক্রমিত ভাইরাস সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রকে সর্তক করে বলে জানা যায়।
কর্মকর্তারা সেসময় বলেন, ‘ল্যাবটি পরিচালনার জন্য যোগ্য টেকনিশিয়ান নেই। পরীক্ষার জন্য এখানে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা প্রয়োজন।’
ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বিজ্ঞানী জিয়াও কিয়াংয়ের বরাতে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ভাইরাসটি ল্যাবে তৈরি হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ না থাকলেও এটি যে ল্যাব থেকে ছড়ায়নি সেটিও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।
Comments