‘আমরা ভিক্ষা চাই না, কাজের পারিশ্রমিক চাই’

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-শ্রীপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
শ্রীপুরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ। ছবি: স্টার

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-শ্রীপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

এ কারখানার কর্মরত অপারেটর, লাইনপ্রধান, ইনপুটম্যান কর্মীরা বলেন, ‘আমরা ভিক্ষা চাইনা, আমাদের কাজের পারিশ্রমিক চাই।’

তারা জানান, চলতি মাসসহ গত তিন মাস ধরে বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এ সময়ে ঘরেও খাবার নেই, বাড়িওয়ালারা বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এলাকায় ত্রাণ দেওয়া হলেও বাইরের জেলার ভোটার হওয়ায় ত্রাণও পাচ্ছেন না।

তারা আরও জানান, গত কয়েকদিন যাবত বেতন ভাতার দাবি জানানো হলেও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেতন প্রদানের কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।

তারা অভিযোগ করেন, গতকাল স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে শ্রমিকদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। কারখানার ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন কর্মকর্তা শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করেছে। কাজের সময় সামান্য কারণে বা ন্যায্য দাবির কথা তুলে ধরা হলে চাকুরিচ্যুতির ভয় দেখান। আর এখন বকেয়া বেতনের দাবি করায় নিজেরাও হুমকি দেন, আবার এলাকার ভাড়াটে লোক দিয়েও হুমকি দেন

এসব প্রতারণা ও নির্যাতনের অতিষ্ঠ হয়ে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শ্রীপুর-ঢাকা সড়ক অবরোধ করেন বলে জানান শ্রমিকরা।

ওই পোশাক কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক এম ইদ্রিস আলী বলেন, ‘দুপুরে কারখানার নীতি নির্ধারক মহলের লোকজন আসলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন। পরে কারখানার ভেতরে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। আগামী ২২ এপ্রিল শ্রমিকদের বেতন প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’

তবে, শ্রমিকদের নির্যাতন বা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানান এম ইদ্রিস আলী।

এ ছাড়াও, মুলাইদ এলাকার একটি সোয়েটার কারখানার শ্রমিকেরা অভিযোগ করেন, গত কয়েকদিন আগে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বিকাশ হিসাব খুলতে বলেন। তারা সে অনুযায়ী হিসাব খুলে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। বৃহস্পতিবার রাতে সবার বিকাশ হিসাবে টাকা জমা হবে বলে কর্তৃপক্ষ ওই দিন জানিয়েছিল। কিন্তু, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোনো টাকা জমা না হওয়ায় শ্রমিকরা ৯টার দিকে কারখানার সামনে গিয়ে কারখানা বন্ধ এবং বিকাশ হিসাবে টাকা পাঠানো হয়েছে বলে নোটিশ দেখতে পান। তখন কারখানায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল না বলে জানান তারা। এজন্য শ্রমিকেরা সেখানেই বিক্ষোভ শুরু করেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে শ্রীপুরের ওই গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে শ্রমিকদের হুমকি দেওেয়ার অভিযোগগুলোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছি। শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরান।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে বিক্ষোভকালে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। পরে শিল্প পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।’

 

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

6m ago